ফের ট্রেনের ধাক্কায় দুটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটল উত্তরবঙ্গে। এবারে ঘটনাস্থল বানারহাট স্টেশনের কিছু আগে দেবপাড়া চা বাগান এলাকায়। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,শুক্রবার সকাল ৮টা৩০মিনিট নাগাদ শিলিগুড়ি জংশন থেকে ধুবড়িগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে হাতি দুটির। ছটি হাতির একটি দল সেই সময় লাইন পার হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনার পৃথক তদন্ত শুরু করেছে রেল ও বনদপ্তর। অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠন। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকায় দিয়ে যাওয়ার সময়ে ট্রেনের গতি ছিল বেশ বেশি। গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাতেই হাতি দুটির মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৬টা ১০মিনিট নাগাদ শিলিগুড়ি জংশন থেকে ছেড়ে ধুবড়ির দিকে যাচ্ছিল ট্রেনটি। বানারহাট স্টেশনের ঠিক আগেই লাইন পার হচ্ছিল ছয়টি হাতি। চারটি হাতি পার হয়ে গেলেও দুটি হাতিকে সজোরে ধাক্কা মারে ট্রেনটি। ট্রেনের ধাক্কায় লাইনের থেকে বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে ওই হাতি দুটি। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
হাতিদের ধাক্কা মারার বিকট শব্দে স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। খবর যায় পুলিশ,রেল এবং বনদপ্তরে। খবর পেয়েই বানারহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তড়িঘড়ি সেখানে পৌঁছে যান রেল ও বনদপ্তরের কর্তারা । প্রাথমিক তদন্তে বনদপ্তর জানতে পেরেছে ট্রেনটির গতিবেগ অনেকটাই বেশি ছিল। চালক এমারজেন্সি ব্রেক কষলেও কোনো লাভ হয়নি। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকলেও কেন ওই এলাকায় ট্রেনের গতিবেগ কমানো হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে পরিবেশপ্রেমী সংগঠন।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, গত ১০ বছরে ডুয়ার্সে রেলে কাটা পড়ে ৬৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। গত বছর জুলাই মাসেও ঠিক একই জায়গায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। পরিবেশ প্রেমী তথা ন্যাফের (himalayan natire and adventure foundation) সদস্য অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের গাইড লাইন অনুযায়ী ওই এলাকায় ট্রেনের গতিবেগ কম রাখার কথা রয়েছে। বনদপ্তর এবং রেলের সমন্বয় করে ট্রেন চালানোর কথা বলা রয়েছে। কিন্তু আদতে কিছুই হচ্ছে না।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা জানিয়েছেন, ‘‘রাতে ওই এলাকায় গতিবেগ কমানোর নির্দেশিকা রয়েছে। তবে দিনের বেলার জন্য তেমন কোনও নির্দেশিকা নেই। চালক এমারজেন্সি ব্রেক কষেছিলেন, কিন্তু কাজ হয়নি। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
বনমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।