মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ও নির্বাচিত সরকারের পতনের জেরে যখন গোটা বিশ্বে নিন্দার ঝড় বইছে, তখনই সে দেশের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কুচকাওয়াজে অতিথি হিসাবে গেলেন ভারতের প্রতিনিধি। মোট আটটি দেশের প্রতিনিধি গত ২৭ মার্চ রাজধানী নাওপিদাওয়ে সেনা কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন। রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও লাওসের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
দিল্লির সাউথ ব্লকের এক শীর্ষ আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মাথায় রেখে কূটনৈতিক স্তরে এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে ভারতকে। তবে গোটা বিশ্ব যখন মায়ানমারে সেনার গুলিতে গণহত্যার নিন্দা করছে, সেখানে ভারত কেন ওই দেশে প্রতিনিধি পাঠাল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর গত দুমাসে মায়ানমারে অন্তত ৫০০ জন সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। যা নিয়ে গোটা বিশ্বের বহু দেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে মায়ানমারে গণহত্যার জেরে সীমান্ত লাগোয়া রাজ্য মিজোরামে শরণার্থীরা ঢোকার চেষ্টা করছেন প্রাণ বাঁচতে।
মায়ানমারে যেভাবে জনতার কণ্ঠরোধ করতে সেনা নির্বিচারে খুন করছে তার তীব্র নিন্দা করেছেন অন্তত একডজন দেশের সেনাপ্রধান। মার্কিন চিফ অফ স্টাফ জেনারেল মার্ক এ মাইলি শুক্রবার একটি বিবৃতিতে মায়ানমারে প্রতিবাদীদের উপর গুলি চালনার তীব্র নিন্দা করেছেন। সেই বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, গ্রিস, ইতালি, জাপান, ডেনমার্ক, দ্য নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ব্রিটেনের সেনাপ্রধানরা মায়ানমারের জুন্টা সরকারকে সেনা প্রয়োগে মানবিক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
কিন্তু এই ইস্যুতে নীরব ভারত। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সব দেশ নিন্দা করলেও ভারত এই বিষয়ে মুখ খোলেনি। এমনকী ভারত সরকার সীমান্ত লাগোয়া রাজ্যগুলি ও আসাম রাইফেলসকে নির্দেশ দিয়েছে, যেভাবেই হোক মায়ানমারের শরণার্থীদের দেশে ঢোকা আটকাতে হবে। যাঁরা ঢুকবেন তাঁদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে।