মোদী-শাহের আশ্বাসের পরও অগ্নিগর্ভ মণিপুর। বৃহস্পতিবার সকালে পার্বত্য রাজ্যে আরও দু'জন মারা গেছেন। রাজ্যের চুরাচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুর জেলার সীমান্তে একটি অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা গুলিবর্ষণে আহত হয়ে তাঁরা মারা গেছেন। কুকি-জোমি-অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুর জেলা এবং মেইতি-অধ্যুষিত বিষ্ণুপুর জেলার খোয়ারেন্টাক এলাকার আশেপাশের দুই জেলার মধ্যবর্তী এলাকায় ২৯ আগস্ট ভোরে গোলাগুলি শুরু হয়েছিল। তখন থেকে তা চলছে বলেই অভিযোগ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত থেমে থেমে গুলিবর্ষণ অব্যাহত ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিষ্ণুপুরের একজন, চুরাচাঁদপুরের চার জন এবং দু'জন আইআরবি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কুকি-জোমি সম্প্রদায়ের আহতদের মধ্যে দু'জন মারা যান। তাঁদের মধ্যে একজনকে গীতিকার এলএস মাংবোই হিসেবে শনাক্ত করা গিয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর গান- 'আমি গাম হিলো হাম' যার অনুবাদ হল 'এটা কি আমাদের দেশ নয়?'- তিনি চলমান সংঘাতের সময়ই লিখেছিলেন। চুরাচাঁদপুর পুলিশ জানিয়েছে, গুরুতর আহত মাংবোইকে চিকিৎসার জন্য আইজলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কিন্তু, আজ সকালে পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। চুড়াচাঁদপুর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে সোনতালে মৃত্যুর পর তাঁকে শহরে ফিরিয়ে আনা হয়।
আরও পড়ুন- ফের দুর্নীতির বিরাট অভিযোগ আদানিদের বিরুদ্ধে, জবাবে কী জানাল মোদী-ঘনিষ্ঠ সংস্থা?
অন্য মৃত, রিচার্ড হেমখোলিন গুইট, যিনি স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী একজন গ্রামীণ প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। তিনিও চুরাচাঁদপুর জেলার বাসিন্দা। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন। গত ২৯ আগস্ট থেকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়েছে চুরাচাঁদপুর-বিষ্ণুপুর জেলায়। ২৯ আগস্ট, অর্থাৎ প্রথম দিনই দুই ব্যক্তি- জংমিনলুন গাংতে এবং লাইবুংজাম ইনাও- যথাক্রমে চুরাচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। বেশ কয়েক মাস হল, জাতিগত সংঘর্ষে উত্তপ্ত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য রাজ্য মণিপুর। মেইতেই এবং কুকি-জোমি গোষ্ঠীর সংঘর্ষে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্য়ুত হয়েছেন। পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ আকার নিয়েছে যে পার্বত্য রাজ্যে পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে। বহু মানুষ তাঁদের পরিবারের পড়ুয়াদের ভিনরাজ্য়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছেন।