গুপ্তচরবৃত্তির সময় হাতেনাতে ধরা পড়ল ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের দুই আধিকারিক। অভিযুক্তদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভারত ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। ২০১৬ সালের পর ফের পাক হাইকমিশনের আধিকারিককে বহিষ্কার করল নয়া দিল্লি। ২০১৬ সালে ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশই একে অপরের হাইকমিশনে নিযুক্ত আধিকারিকদের দেশ ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছিল। বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাক হাইকমিশনের দুই আধিকারিককে রবিবার নয়া দিল্লিতে ধরা হয়েছিল।'
আবিদ হুসেন ও মহম্মদ তাহির- এই দুই পাক আধিকারিকরই গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করছিল বলে নিশ্চিৎ করেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সূত্র জানিয়েছে, 'দেশের সুরক্ষা সংক্রান্ত নথি আই ফোনে হস্তান্তরের সময় ওই দুই পাক আধিকারিক হাতেনাতে ধরা পড়েন। তারা ভারতীয় বলে প্রথমে দাবি করেছিল। জাল আধার কার্ড দেখায় তারা। পরে জেরার সময় ওই দু'জন স্বীকার করে যে তারা পাক হাইকমিশনের আধিকারিক ও সেদেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-য়ের হয়ে কাজ করে।'
'কূটনীতিক মিশনের সদস্য হলেও পাক দূতাবাসের ওই দুই কর্মী যে ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত তা তাঁদের পদমর্যাদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এই কারণে তাঁদেরকে পারসোনা নন গ্রাটা বা অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে।' বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রবল প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামাবাদ। পাক বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, '৩১ মে মিথ্যা ও অপ্রমাণযোগ্য অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনের আধিকারিককে ধরা হয়েছে। কমিশনের হস্তক্ষেপে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কূটনীতিকদের উপর এ ধরনের অত্যাচার, হুমকি ও চাপের প্রবল বিরোধিতা করা হচ্ছে।' ভারতের পদক্ষেপে ভিয়েনা কনভেশন লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, 'করোলবাগ থেকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের কর্মীরা তাদের হাতেনাতে ধরে। ইন্সপেক্টর উমেশ বার্তওয়াল ও নীরজ কুমার জানতে পারেন যে, গুরুত্বপূর্ণ নথি নিতে দুই ব্যক্তি চরের সঙ্গে দেখা করতে আসছে। ফিরে যাওয়ার সময় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। যে ব্যক্তি নথি হস্তান্তর করল তার খোঁজ শুরু হয়।' অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অন্য এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। সন্ধান চালিয়ে করোলবাগ থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ। পরে পাক দূতাবাসে দু'জনকে হস্তান্তর করা হয়। দিল্লি পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় পাক হাইকমিশনের অভিযুক্ত আধিকারিক স্বীকার করেছে যে, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার অবস্থান নিয়ে নথি সংগ্রহ করছিল তারা।
ভারত-পাক সম্পর্ক এমনিতেই তলানিতে। গত বছর অগাস্টে জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর তার আরও অবনতি হয়। দুই দেশই তাদের হাই কমিশনারদেরকে ডেকে নেয়। দু তরফের ডেপুটি হাই কমিশনারই বর্তমানে চিফ অফ মিশন হিসাবে কাজ করছেন।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন