বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে শরীরে শূকরের হার্ট প্রতিস্থাপন করার পরও বেশ কিছুদিন বেঁচে ছিলেন ডেভিড বেনেট নামের ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছিল ওই ব্যক্তির হার্টের অসুখ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে জটিল অপারেশনের পর তার দেহে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পর দুই মাস বেঁচে ছিলেন তিনি। নিউইয়র্কের গবেষকরা ফের মানব শরীরে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এবং অবশেষে সেই কাজে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
নিউইয়র্কের গবেষকরা গত মাসে দুটি ব্রেন ডেড মানুষের মধ্যে শূকরের হৃদপিণ্ড সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন। ডেভিড বেনেটের মৃত্যুর পর থেকেই মানব দেহে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন বিজ্ঞানীদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষকে বাঁচানোর জন্য একটি ঐতিহাসিক পদ্ধতি। সেই পদ্ধতি জীবিত মানুষের মধ্যে প্রয়োগের আগে ট্রায়াল হিসাবে বিজ্ঞানীরা দু’জন ব্রেন ডেড মানুষের শরীরে সফলভাবে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেছেন।
অপারেশনের দায়িত্বে থাকা প্রধান শল্যচিকিৎসক ড. নাদের মোয়াজামি, এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “প্রথমটির ক্ষেত্রে আমরা অনেক কিছু শিখেছিলাম। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে আমরা তার চেয়েও অনেক বেশ কিছু শিখেছি। যা ভবিষ্যতের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক নতুন দরজা খুলে দিতে পারে”।
আরও পড়ুন: <টানা বৃষ্টিতে ডুবল মোদীর রাজ্য! গুজরাটে একদিনে মৃত ৬>
কয়েক মাস আগে, এনওয়াইইউয়ের একটি দল এবং বার্মিংহামের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পৃথকভাবে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন পরীক্ষা করছিলেন। এবিষয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন মৃত ব্যক্তির উপর এই ধরণের পরীক্ষা পদ্ধতি আরও ভাল ভাবে করা সম্ভব কারণ এক্ষেত্রে তাদের জীবন কোন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে না”।
আরও পড়ুন: <নয়া অশোক স্তম্ভের সিংহ ‘হিংস্র’! বিরোধীদের জবাব দিতে আসরে কেন্দ্র>
গবেষকরা মঙ্গলবার বলেছেন, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকরের অঙ্গ ব্যবহার করার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের এক ধাপ কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা”। এক সাংবাদিক সম্মেলনে গবেষকরা দাবি করেন “ শূকরের হৃদপিন্ডের প্রতিস্থাপনের পর টানা তিন দিন পর্যবেক্ষণ চালানো হয়েছে এবং ফলাফল ইতিবাচক”। যদিও মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে ৫৭ বছর বয়সীর হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন কেন সফল হয়নি তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও চুলচেড়া বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডা. নাদের মোজামি, এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোনের হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশনের সার্জিক্যাল ডিরেক্টর এপ্রসঙ্গে বলেছেন “আমাদের লক্ষ্য হল জীবিত মানুষের শরীরে হার্ট অথবা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের সময় ওষুধ অথবা কোন যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই শূকরের হৃদপিণ্ড অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন করা। আর সেই লক্ষেই এগিয়ে চলেছে চিকিৎসাবিজ্ঞান।