পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার কালুওয়ারা গ্রামের দুই মেয়ে কারিনা কউর (১২) এবং কিরনা রানি (১৩) প্রতিদিন নৌকোয় চেপে সুতলুজ নদী পেরিয়ে গাট্টি রাজোকে গ্রামে সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে পড়তে যায়। এই খবর পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার ফিরোজপুর জেলার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ওই দুই স্কুলপড়ুয়াকে সম্মানিত করলেন পঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রী হরজোৎ সিং বেইনস।
গত বছর ১৬ নভেম্বরের এক প্রতিবেদনে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ফিরোজপুরে ভারত-পাক সীমান্তের জিরো লাইনের গ্রাম কালুওয়ারার মেয়েদের গল্প তুলে ধরেছিল। যেখানে, ওই গ্রামের মেয়েদের প্রতিদিন একটি কাঠের নৌকা (বেড়ি) বাইতে হয়। তারপর চার কিলোমিটার হেঁটে গাট্টি রাজোকে গ্রামের সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে তারা পৌঁছয়। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ওই দুই পড়ুয়াকে। এই আমন্ত্রণে স্বভাবতই আনন্দিত হয়েছে কারিনা ও কিরনা। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেন।
সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল গাট্টি রাজোকের অধ্যক্ষ সতিন্দর সিং বলেন, 'ওই মেয়েরা তাদের সাহসিকতা এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ়তার জন্য সম্মানিত হয়েছে। তারা নৌকোয় করে নদী পার হয়েই হাইস্কুলে পৌঁছয়। এজন্য প্রতিদিন সকালে নিজেরাই নৌকো টানে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা স্কুলে যায়। তাদের নিজের গ্রামে শুধুমাত্র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। কিন্তু, পঞ্চম শ্রেণির পর লেখাপড়া ছাড়ার পরিবর্তে তারা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর, কষ্ট করে হলেও নৌকায় চেপে উচ্চবিদ্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর, সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এখনও প্রতিদিন নৌকোয় চেপে স্কুলে যাচ্ছে।'
আরও পড়ুন- ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির গোড়ার কথা, কীভাবে তৈরি হয়েছিল?
এই দুই পড়ুয়ার মধ্যে কারিনা কউর ক্লাস সিক্সে পড়ে। কারিনা বৃহস্পতিবার বলল, 'মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে আমি উচ্ছ্বসিত। আনন্দের সঙ্গে আমি নৌকোয় যাতায়াত করি। মন্ত্রী আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন যে আমরা তাঁকে আমাদের গ্রামে নৌকায় চড়াতে পারব কি না। আমি বলেছি, যে কোনও সময় রাজি।'
Read full story in English