রোহিঙ্গাদের উপর মায়ানমার সেনার অত্যাচারের খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন ওঁরা। রোহিঙ্গাদের নির্মমভাবে হত্যালীলার ঘটনা খবরের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন ওঁরা। আর সেকারণেই কারবাসের সাজা হল দুই সাংবাদিকের। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে ৭ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনাল মায়ানমারের আদালত। দেশের গোপনীয় তথ্য বাইরে ফাঁস করার অভিযোগে কারাবাসের সাজা শোনানো হয়েছে রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সো ও-কে।
মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সে দেশের সেনার হাতে অত্যাচারিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে খবর করাতেই এমন পরিণাম বলে জানা গিয়েছে। যে ঘটনার নিন্দায় ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। এ ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের মুখ্য সম্পাদক স্টিফেন জে অ্যাডলার বলেন,‘‘আজ মায়ানমারের জন্য দুঃখের দিন। রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সো ও এবং সাংবাদিকতার জন্যও দুঃখের দিন।’’ সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মায়ানমারে আটক হন ওই দুই সাংবাদিক। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের একটি গ্রামে ১০ জন রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যার খবর করছিলেন ওই দুই সাংবাদিক।
আরও পড়ুন, প্রত্যাহার করা হবে না সু কি-র নোবেল শান্তি পুরস্কার
রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিক নীতি মেনেই খবর করেছেন বলে আদালতে দাবি করেন সাংবাদিক ওয়া লোন। যে নথি প্রকাশ্যে আনার জন্য রাজ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই নথি এক পুলিশ অফিসারই তাঁকে দেন বলে দাবি করেন তিনি। মায়ানমারের সংবাদমাধ্যমের আইন লঙ্ঘন করেননি বলেই দাবি করেছেন লোন।
সংবাদসংস্থা পিটিআই রয়টার্সের প্রাক্তন সাংবাদিক আং লা টুনকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বর্তমানে মায়ানমার সরকারের তথ্য মন্ত্রকের উপমন্ত্রী। পুরো বিষয়টি নিয়ে সু কি-র নীরবতাকে সমর্থন করে আং লা তুন সংবাদসংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, ‘‘বিচারবিভাগের সমালোচনা করার অর্থ আদালতের মানহানি করা।’’ গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিকদের আইনজীবীরা মায়ানমারের রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁদের মুক্তির আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছে পিটিআই।
অন্যদিকে, নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী সুকি রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার নিয়ে সোচ্চার না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় বয়েছে। তাঁর পুরস্কার ফেরত হবে কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিভিন্ন মহল।