কয়েক লক্ষ টাকা দিলেই চাকরি হবে কানাডায়, এই টোপ দিয়ে খোদ কলকাতাতেই রমরমিয়ে চলছিল প্রতারণা চক্র। শুক্রবার চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল দুই মহিলাকে। সূত্রের খবর, কানাডাতে চাকরির ভুয়ো আশ্বাস দিতেন ওই দুই মহিলা, এমনকী চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকাও আদায় করতেন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে। এরপর এই চক্রের সন্ধান পেয়ে শুক্রবার সেখানে যায় কলকাতা পুলিশ।
অভিযুক্তদের একজন উপেন ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা বছর ৩৭-এর বর্ণালি বিশ্বাস, এবং অন্যজন রাজা এস সি মল্লিক রোডের বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী সুদীপা সাহা। জওহরলাল নেহেরু রোডে লিঙ্ক আবরোড কমিউনিকেশন এজেন্সি নামে একটি প্লেসমেন্ট এজেন্সি খুলেছিলেন ওই দুই মহিলা। চাকরি প্রার্থীদের কাছে দাবি করতেন, কানাডার নামী সংস্থার প্রতিনিধি তাঁরা।
আরও পড়ুন: দেশে চাকরিতে অগ্রাধিকার পান পুরুষরাই, বলছে সমীক্ষা
পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরির পাওয়ার জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষী বহু ব্যক্তিই নিজেদের সঞ্চয় থেকে তাঁদের টাকা দিতেন, এমনকী জমি বাড়ি বন্ধক দিয়েও ওই মহিলাদের টাকা দিয়েছেন অনেকেই। তবে টাকা জমা দেওয়ার পরই রূপ পাল্টে যেত তাঁদের, প্রার্থীদের সঙ্গে আর কোনও রকম যোগাযোগ করা হত না সংস্থার তরফে, এবং অজুহাত হিসেবে জানানো হত, আবেদনপত্রে একাধিক ভুল থাকায় এবং প্রয়োজনীয় নথি ঠিকমতো জমা না পড়ায় কাজের কোনও অগ্রগতি হয়নি।
এরপর একাধিক অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক ছদ্মবেশে কানাডায় চাকরির আবেদন নিয়ে যান অভিযুক্তদের কাছে। সূত্রের খবর, তখনই ওই দুই মহিলা চার লক্ষ টাকা চান ওই পুলিশ আধিকারিকের কাছে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত বর্ণালি এবং সুদীপাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, খোঁজ চালিয়ে ইতিমধ্যেই ১৬ জন চাকরির আবেদনকারীকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন ওই দুই মহিলা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬, ৪০৯, এবং ১২০বি ধারায় মামলা রুজু করা করা হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে তাঁদের। ঘটনার তদন্ত করার সময় মহিলাদের ব্যাঙ্কের বিভিন্ন নথি এবং বেশ কয়েকি ল্যাপটপও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।