প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মাকে নিয়ে দেশব্যাপী গন্ডগোলের ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা। তার মধ্যেই উত্তেজনা ছড়াল কংগ্রেসশাসিত রাজস্থানে। নুপুর শর্মাকে সমর্থন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় খুন হয়ে গেলেন এক দর্জি। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। এই ঘটনার খবর চাপা থাকেনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ব্যক্তি মিলে ওই দর্জিকে খুন করেছে। এই ঘটনার পরই রাজস্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে শুরু হয় প্রতিবাদ। রাস্তায় জ্বালানো হল টায়ার।
Advertisment
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে মুখ খুলতে হয় খোদ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে। তিনি বলেন, 'আমি এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করছি। উদয়পুরে এক যুবককে খুন করা হয়েছে। সমস্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। তিনি লেখেন, 'জয়পুরের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা শুনে আমি পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি। ধর্মের নামে বর্বরতা সহ্য করা হবে না। যাঁরা এই আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের একসঙ্গে মিলেমিশে ঘৃণাকে হারাতে হবে। আমার সকলের কাছে আবেদন, দয়া করে শান্তি এবং সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন।' ঘটনার নিন্দা করেছে বামেরাও।
Advertisment
পরিস্থিতি সামলাতে উদয়পুর-সহ রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজস্থান পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) হাওয়া সিং ঘুমারিয়া জানান, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের নেতৃত্বে সশস্ত্র পুলিশের ৬০০ সদস্যের একটি দলকে উদয়পুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বহাল করা হয়েছে। পরে পুলিশ রাজসমন্দ জেলা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই দুই ব্যক্তিই উদয়পুরের দর্জিকে খুন করেছে। পরে তারা পালানোর চেষ্টা করছিল। সেই সময় তাদের ধরে ফেলা হয়েছে। ধৃতদের একজনের নাম মহম্মদ রিয়াজ। অপরজন তারই সঙ্গী
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, নিহত দর্জির কাছে এক যুবক পোশাকের মাপ দেওয়ার নাম করে যায়। অপরজন গোটা ঘটনাটা ভিডিও করছিল। দর্জি যখন ওই যুবকের পোশাকের মাপ নিচ্ছিলেন, সেই সময় ধারাল অস্ত্র বের করে তাঁর গলা কেটে দেয় হামলাকারী। ভিডিওয় আহত ওই দর্জিকে বারবার বলতে শোনা গিয়েছে, 'কী হয়েছে, আমাকে বল, কেন এমন করলে!' পুলিশ জানিয়েছে, এতেই ক্ষান্ত হয়নি আততায়ীরা। ওই ভিডিওয় তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও এভাবেই খুনের হুমকিও দিয়েছে।