আস্থাভোটের পথে হাঁটলেন না মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। আস্থাভোটে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে বুধবার রাতেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। এর আগে বুধবার মহারাষ্ট্রের রাজনীতি আস্থাভোট ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে নির্দেশ দেন বিধানসভায় আস্থা প্রমাণের। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার মধ্যেই বিধানসভায় তাঁর সরকারের প্রতি আস্থা উদ্ধবকে প্রমাণ করতে হবে বলে জানিয়ে দেন রাজ্যপাল। কিন্তু, সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চলে যায় শিবসেনা।
দিনভর শুনানি শেষে বুধবার রাত ৯টার পর রায় জানায় শীর্ষ আদালত। আস্থাভোট নিয়ে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি। উলটে, আস্থাভোটের রাস্তাই দেখিয়ে দেয় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে আসেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। বক্তব্যে উদ্ধব বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়া নিয়ে আমার কোনও আফশোস নেই। আমি যা কিছু করেছি মারাঠা জাতি এবং হিন্দুত্বের স্বার্থে করেছি। সকলের সামনে আমি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার কথা জানিয়ে দিচ্ছি।'
আরও পড়ুন- বড় ধাক্কা উদ্ধবের, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বৃহস্পতিবারই আস্থাভোট
বক্তব্যে তিনি ধন্যবাদ দেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারিকেও। রাজ্যপাল গণতান্ত্রিক রীতি মেনে বিধানসভায় আস্থাভোট প্রমাণের নির্দেশ দিয়েছেন বলেই উদ্ধব জানান। একইসঙ্গে বক্তব্যে তীব্র কটাক্ষ করেন একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন দলের বিদ্রোহী শিবিরকে। উদ্ধব বলেন, 'শিবসেনা যাদের পদ দিয়েছিল, আজ তারাই দলের ওপর ক্ষুব্ধ। যাদেরকে অনেক কিছু দেওয়া হয়েছিল, আজ তারাই ক্ষুব্ধ। আর, সাধারণ শিবসৈনিকরা, যাঁরা কিছুই পায়নি, তাঁদের বরং দলের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে।'
শিবসেনার জোটসঙ্গী জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহী শিবিরের মূল ক্ষোভ। তার তোয়াক্কা না-করে বুধবার পদত্যাগের পর উদ্ধব ধন্যবাদ জানান শরদ পাওয়া ও সনিয়া গান্ধীকে। সরকারের এই চরম সংকটে পাওয়ার ও কংগ্রেস সভানেত্রী যেভাবে তাঁর পাশে থেকেছেন, তার প্রশংসা করেন শিবসেনা প্রধান। উদ্ধব বলেন, 'মহারাষ্ট্র সরকার ওসমানাবাদ এবং ঔরঙ্গাবাদের নাম বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঔরঙ্গাবাদের নাম বদলে শম্ভাজিনগর করার কথা জানিয়েছে। বুধবারের এই সভায় এনসিপি থেকে কংগ্রেস কোনও দলের বিধায়কই নামবদলের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাননি।'
ঔরঙ্গাবাদের এই নামবদলের দাবি তুলেছিলেন উদ্ধবের বাবা বালাসাহেব ঠাকরে। কিন্তু, বালাসাহেবের সেই ইচ্ছাপূরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বুধবার মহারাষ্ট্রের মন্ত্রিসভায় শিবসেনার মাত্র চার জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বাকিদের সকলেই এনসিপি এবং কংগ্রেসের মন্ত্রী। এনসিপির দুই বিধায়ক বর্তমানে জেলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। তাঁরা হলেন নবাব মালিক ও অনিল দেশমুখ। উদ্ধবের আস্থাভোটে তাঁদের অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, উদ্ধব আস্থাভোট এড়িয়ে আগেই পদত্যাগ করায় আপাতত বিধানসভার কাজে ফের অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন জেলবন্দি দুই এনসিপি বিধায়ক।
Read full story in English