ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নিজেই জানিয়েছেন টুইটারে। একটি ভিডিও বার্তায় ৫৫ বছর বয়সী জনসন বলেছেন, তিনি আপাতত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে স্বেচ্ছা আইসোলেশনে থাকবেন, তবে করোনা মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন কার্যকলাপেরও নেতৃত্ব দেবেন।
ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র জানান, "গতকাল (বৃহস্পতিবার) মৃদু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ইংল্যান্ডের মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি'র ব্যক্তিগত পরামর্শে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটেই রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার কর্মীরা পরীক্ষা করেন, এবং পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক। এই পরিস্থিতিতে নির্দেশ মেনে ডাউনিং স্ট্রিটে স্বেচ্ছা আইসোলেশনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সরকারি অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।"
শুক্রবার সকালে টুইটারে ভিডিও পোস্ট করে জনসন বলেন তাঁর জ্বর এবং কাশি দেখা দিয়েছে। "আমি বাড়ি থেকেই কাজ করছি, স্বেচ্ছা আইসোলেশনে রয়েছি, এবং সেটাই করা উচিত। তবে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে আমি চালিয়ে যাব... আমার সমস্ত শীর্ষ দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশের লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে।" ভিডিওটি জনসন নিজেই তাঁর মোবাইলে রেকর্ড করেছেন।
ব্রিটেনের 'দ্য গার্ডিয়ান' সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জনসন-এর বাগদত্তা ক্যারি সিমন্ডস, যিনি পাঁচ মাস অন্তঃসত্ত্বা, আপাতত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেই। অন্য কোথাও স্বেচ্ছা আইসোলেশনে রয়েছেন। তিনিও আক্রান্ত কিনা, সে বিষয়ে এখনও কোনও খবর পাওয়া যায় নি। Covid-19 আক্রান্ত হলে সর্বসাধারণের তুলনায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ঝুঁকি বেশি কিনা, সে বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করে নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসাস জনসনকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।
জনসনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
প্রসঙ্গত, দু'দিন আগেই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হন ব্রিটেনের ৭১ বছর বয়সী যুবরাজ চার্লস তথা প্রিন্স অফ ওয়েলস। 'দ্য় গার্ডিয়ান' সূত্রে খবর, প্রিন্স চার্লসের শরীরে কোভিড ১৯ ভাইরাস পাওয়ার পর তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের সামান্য় উপসর্গ দেখা গেলেও তিনি সুস্থ ছিলেন বলে খবর। তাঁর স্ত্রী ক্য়ামিলাকেও আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। যদিও তাঁর শরীরে মারণ ভাইরাস মেলেনি। দুজনকেই স্কটল্য়ান্ডে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার করোনা আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেদেশে COVID-19 আক্রান্তের সংখ্যা আপাতত ৮৫,০৮৮, যেখানে চিনে আক্রান্ত ৮১,২৮৫ এবং ইতালিতে ৮০,৫৮৯। বৃহস্পতিবার একদিনে ১৬ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, এই সংখ্যাবৃদ্ধি দেশে ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষার ফল। "কেউ জানে না চিনে আসল সংখ্যা কত," দাবি ট্রাম্পের।
এদিকে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ লক্ষ, জানাচ্ছে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির 'গ্লোবাল ড্যাশবোর্ড'। মোট আক্রান্তের সংখ্যা আপাতত ৫১০,১০৮, মৃতের সংখ্যা ২২,৯৯৩।