রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ইস্তফা দিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। পদে বসার ৪৫ দিনের মধ্যে তিনি ইস্তফা দিলেন। ব্রিটেনের ইতিহাসে এটাই কোনও প্রধানমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ততম কার্যকালের মেয়াদ। ব্রিটেনে এখন চূড়ান্ত আর্থিক সমস্যা চলছে। বৃহস্পতিবার ট্রাস জানান যে তাঁর জমানায় ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সেই অবনতি রোখার জন্য ট্রাস যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে ব্রিটেনের আর্থিক ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ট্রাসের নিজের দল ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি পর্যন্ত নতুন সরকারের নীতি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।
তাঁর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট অফিসের দরজার বাইরে কথা বলার সময়, ট্রাস স্বীকার করে নেন যে তিনি তাঁর প্রতি দলের নেতাদের বিশ্বাস হারিয়েছেন। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা-ও পূরণ করতে পারেননি। ট্রাস বলেন, 'যদিও আমি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু, আমি পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। আমি আমাকে সমর্থনের যোগ্য মর্যাদা দিতে পারিনি। তাই রাজার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে জানিয়েছি যে আমি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করছি।'
ট্রাস আরও বলেন, 'আমি আজ সকালে ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির সাথে দেখা করেছি। আমরা একমত হয়েছি যে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা নির্বাচন হয়ে যাবে। এটি নিশ্চিত করবে যে আমরা আমাদের আর্থিক পরিকল্পনাগুলো কার্যকরী করা, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার পথে থাকব।' প্রধানমন্ত্রী পদে বসার ছয় সপ্তাহের মধ্যে, ট্রাস তাঁর প্রায় সমস্ত আর্থিক নীতি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হন। কারণ, তাঁর সরকারের নীতি বাজারের আর্থিক ক্ষতি বৃদ্ধি করছিল। যার জেরে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা-কর্মীদের বিশ্বাস ট্রাসের ওপর থেকে উঠে যেতে শুরু করে।
আর, এসবের জেরে গত শুক্রবার থেকে তাঁর সরকারের চার জন প্রবীণ মন্ত্রীর মধ্যে দুজন ট্রাসকে ছেড়ে গিয়েছেন। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট তিনি কার্যত অভিব্যক্তিহীন হয়ে পড়েন। কারণ, তাঁর নতুন অর্থমন্ত্রীই ট্রাসের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো লেখা কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছেন। আর, ট্রাস যখন তাঁর নিজের অবস্থানে অটল থাকার চেষ্টা করেন, সেই সময় তাঁকে পার্লামেন্টে হাসি এবং চিৎকার শুনতে হয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির এক সদস্য পার্লামেন্টে বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, 'আমরা এভাবে চলতে পারি না।' তারপরই বৃহস্পতিবার ইস্তফার কথা জানালেন ট্রাস।
Read full story in English