দুই কর্মীর বিরুদ্ধে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগ উঠছেই তাদের মৃত্যুদণ্ড জারি করল ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম-ইন্ডিপেনডেন্ট (উলফা-আই)। শনিবার এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের এই নিষিদ্ধ সংগঠনটি।
উলফা-আইয়ের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, সংগঠনের দুই কর্মী ধনজিৎ দাস এবং সঞ্জীব শর্মাকে পুলিশ তাদের খবর পাচারের জন্য নিয়োগ করেছিল। এই দুজন পুলিশ প্রশানকে উলফার সব তথ্য দিত। উলফা-আইয়ের দাবি, ধনজিৎ দাস গত ২৪ এপ্রিল নিষিদ্ধ সংগঠনটির শিবির থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরের দিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নাকি ধনজিৎ জানিয়েছিল সে অসমের বারপেটা জেলার বাসিন্দা। পুলিশে গুপ্তচরবৃত্তি অভিযোগে সে স্বীকারও করে নেয়। সে উলফার বহু সহকর্মীকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণেও রাজি করিয়েছিল এবং পুলিশের কাছে সংগঠনের সঙ্গে কারা যুক্ত এবং তাদের সহযোগিদের সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করত।
পাশাপাশি সঞ্জীব শর্মাকে গুপ্তচর হিসাবে দলে অনুপ্রবেশ করিয়েছিল পুলিশ। এ জন্য প্রসানের তরফে সে অর্থও পেত। তথ্য সরবারহের জন্য তার কাছে 'উন্নত যোগাযোগ ডিভাইস'ও ছিল। গত মাসে, উলফার-আইয়েরতরফে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে গুপ্তচরবৃত্তির কথা সঞ্জীব শর্মা স্বীকার করেছে। জানিয়েছে যে, তাকে আসম পুলিশের একজন শীর্ষ কর্তা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র আধিকারিক তথ্য দেওয়ার জন্য নিয়োগ করেছিলেন।
ভিডিওতে, শর্মা দাবি করেছেন যে, তার বড় ভাই (অপূর্ব কুমার শর্মা), সেনাবাহিনীর একজন প্যারা-কমান্ডো, কয়েক মাস আগেই মণিপুরে অতর্কিত হামলায় নিহত হয়েছিলেন। এর পরে, সিনিয়র পুলিশ অফিসার এবং পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (গুয়াহাটি) পার্থ সারথি মহন্ত তাকে তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এবং উলফার ক্যাম্প থেকে তথ্য সরবারহের জন্য কাজে যোগ দিতে বলেছিলেন। লক্ষ্যপূরণ হলে পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মহন্ত তাকে ১ কোটি টাকা দেওয়ারও নাকি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
যদিও, মহন্ত শর্মার এই এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন যে, 'আমি জানি না কেন লোকটি আমারনাম নিয়েছে।' তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি গুয়াহাটি সিটি পুলিশের আওতাধীন। সে গুয়াহাটি শহরের পুলিশ অফিসার। তাই এই মামলার বিষয়টি অসম পুলিশ দেখছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধি অসম পুলিশের ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্তে সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। প্রতিবেদন অনুসারে, গত কয়েক মাসে উলফা-আইয়ের কর্মী নিয়োগে উত্থান দেখা গিয়েছে। চলতি বছর এপ্রিল মাসে, তিনসুকিয়ার একজন যুব কংগ্রেস নেতা এই নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগ দিয়েছেন বলে সন্দেহ।
Read in English