Advertisment

এক্সক্লুসিভ: চিনা নজরদারিতে রিজিজু-মুফতি সহ উত্তর-পূর্ব ও জম্মু-কাশ্মীরের একাধিক মুখ্যমন্ত্রী-আমলা

ভৌগলিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দেশের এইসব অঞ্চল। তাই এখানকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের উপর নজারদরি অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
পাক মানচিত্রে জম্মু-কাশ্মীর, এসসিও বৈঠক ছাড়লেন ডোভাল

চিনা নজরদারিতে রিজুজু-মুফতি

ভারতে অন্তত ১০ হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তির উপর নজরদারি চালাচ্ছে চিনা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ঝেনহুয়া। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তদন্তমূলক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। নজরদারির তালিকায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে একাধিক কেন্দ্রীয়মন্ত্রী, আমলা যেমন রয়েছেন, তেমনই তালিকায় নাম রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

Advertisment

ডিজিটাল দুনিয়ায় ঝেনহুয়ার নজরদারিতে রয়েছেন উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য মূলত অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, নাগাল্যান্ড এবং কেন্দ্র শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের ১৮০ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্য। উল্লেখ্য ভারতের এই সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে ও ভৌগলিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, ঝেনহুয়ার তথ্যভাণ্ডারে কাশ্মীর উপত্যকা ও লাদাখের উল্লেখযোগ্য ৩০ উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও আমলার তথ্য রয়েছে।

জানা গিয়েছে ঝেনহুয়া ডাটা ইনফরমেশন টেকনোলজি নামে চিনা ওই প্রযুক্তি সংস্থা ডিডিটাল দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত ভারতেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের গতিবিধির উপর নজর রেখে চলেছে। তাঁরা নতুন কী তথ্য আপলোড করছেন, তাঁদের সম্পর্কে কী আপলোড হচ্ছে তা নজরে রাখা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বিশাল তথ্যভাণ্ডার। গুরুত্বপূর্ণ হল, এই সংস্থাই ওয়েবসাইটেই উল্লেখ রয়েছে যে তারা চিনা সেরকার, সেনা ও শাসকদলের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।

উত্তরপূর্ব ভারতের উপর কেন চিনা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নজরদারি? এর একাধিক কারণ রয়েছে। তবে অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ কারণটি হল, সেদেশের সীমানায় বহ্মপুত্রের উপর বাঁধ নির্মাণের মরিয়া চেষ্টা এবং সেহেতু নদীর গতিপথ বদলের পরিকল্পনা। যাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী ভারত-চিনের সংঘাত অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে।

ঝেনুয়ার ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ অরুণাচল, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, সিকিম, ত্রিপুরার বর্তমান ও প্রাক্তন প্রায় ১২ জন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁদের আত্মীয়দের তথ্য। এই সব রাজ্যগুলোর হয়ে শক্তি, জলসম্পদ, সেচ, নদী উন্নয়ন, পূর্ত সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দফতরে কর্মরত আমলাদের গতিবিধিও।

কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও ও তাঁর ডেপুটি ওয়াই প্যাট্টনও চিনা প্রযুক্তি সংস্থা ঝেনঝুয়ার নজদারিতে রয়েছে।

কেবল আন্তর্জাতিক সীমান্তের অবস্থানের জন্যই নয়, বরং কেন্দ্রের 'পূবে তাকাও নীতি' বাস্তবায়ণের ক্ষেত্রেও এই সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগসূত্র স্থাপণ করেছে দেশের উত্তরপূর্ব ভারতের এই আট রাজ্য।

এছাড়া রাজনৈতিকভাবেও ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে বিজেপি। বর্তমানে আসাম, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মণিপুরে পদ্ম শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। এছাড়াও বেশ কটিতে বিজেপি জোট গড়ে সরকারের রয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি ছাড়াও নজরদারির তালিকায় রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি গুলাম আহমেদ মীর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সইফুদ্দিন সোজ, করণ সিং।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঝেনহুয়ার বিদেশি ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারে আসাম ও মেঘালয়ের প্রাক্তন দু'জন মুখ্যমন্ত্রী, অরুণাচলের প্রাক্তন তিন জন, মণিপুর-সিকিম-মিজোরামের এক জন করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সব তথ্য রয়েছে। এছাড়াও, নজরদারিতে রাখা হয়েছে বর্তমানে লাদাখের উপরাজ্যপালের পরামর্শদাতা প্রাক্তন আমলা উমাঙ্গ নরুলা এবং বোমডিলার প্রাক্তন বিধায়ক ও অরুণাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর পরামর্শদাতা জেপু দেরুকে।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

national news India china
Advertisment