উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর এই প্রথম জম্মু কাশ্মীর সফরে অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শ্রীনগর। রাস্তার ধারের বিল্ডিংয়ের উপরে মোতায়েন শার্পশুটার। শহর জুড়ে বুলেট-প্রুফ মোবাইল বাঙ্কারের টহলদারি। সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে পুলিশি নজরদারি। অমিত শাহের সফরকালে গোটা শ্রীনগরে বাইক চলাচলে অলিখিত 'নিষেধাজ্ঞা' জারি। শাহের সফরের আগেই জন-নিরাপত্তা আইন (PSA)-এর অধীনে কয়েকশো ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই উত্তপ্ত উপত্যকা। শুধু চলতি মাসেই জম্মু কাশ্মীরে ১১ নিরীহ নাগরিককে নিশানা করেছে জঙ্গিরা। এদের মধ্যে অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। এই আবহেই কাশ্মীর সফরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহের সফরকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তার আয়োজন কাশ্মীর পুলিশের। সতর্ক রয়েছে সেনা। সোমবার পর্যন্ত উপত্যকায় থাকবেন শাহ। অমিত শাহের সফরের শেষ পর্যন্ত ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় থাকছে শ্রীনগরে। শনিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শ্রীনগরে স্বাগত জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা।
সরকারি ঊর্ধ্বতন এক কর্তা জানিয়েছেন, অমিত শাহের সফরের সময় যে নিরাপত্তার কড়াকড়ি রয়েছে, তা সাম্প্রতিক বছরগুলির মধ্যে সবচেয়ে কঠোর। জানা গিয়েছে, আগামিকাল শের-ই-কাশ্মীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করতে পারেন অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই রাজভবন থেকে শের-ই-কাশ্মীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় সাধারণ নাগরিকের চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে অমিত শাহের সফরকে কেন্দ্র ভূস্বর্গে সেনা-পুলিশের এই কড়াকড়ির তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পিডিপি নেত্রী মহবুবা মুফতি। জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি টুইটে লিখেছেন, "জম্মু কাশ্মীরে বাইক বাজেয়াপ্ত করার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা। মর্যাদার সঙ্গে কাশ্মীরি যুবকরা জীবিকা নির্বাহের যে কাজ করছিলেন, তা ছিনিয়ে নেওয়ার আরেকটি উপায়।"
আরও পড়ুন- উৎসবের মরশুমে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা, একদিনে ভাইরাসের বলি আরও ৫৬১
ভূস্বর্গে উত্তপ্তকর পরিস্থিতির মধ্যে শাহের সফর। তাই আগেভাগেই জোরদার তৎপরতা নিয়ে রেখেছে জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৯০০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে পাথর নিক্ষেপকারী, জঙ্গিদের আত্মীয় এবং জঙ্গি গোষ্ঠীর ‘ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ বলে চিহ্নিত ব্যক্তিরা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের অনেককে পিএসএ-এর অধীনে আটক করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় আটক ব্যক্তিকে সরকার এক বছর পর্যন্ত বিনা বিচারে আটকে রাখতে পারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র গত সপ্তাহে প্রায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে PSA-এর অধীনে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার জম্মু কাশ্মীর প্রশাসন PSA-এর অধীনে আটকদের মধ্যে ২৬ জনকে উত্তরপ্রদেশের আগ্রা জেলে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন