Parliament Session: নির্বাচনী সংস্কারের স্বার্থে বড়সড় পদক্ষেপ নিল মোদি সরকার। সোমবার সংসদে পাশ করা হয় নির্বাচনী আইন (সংশোধিত) বিল ২০২১। আইন মন্ত্রী কিরেন রিজেজু এই বিল লোকসভায় পেশ করেন। ভোটার পরিচয়পত্রের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্তি করতে এই বিল। যদিও সংসদে বিজেপি বিরোধী সব দল এই বিলের বিরোধিতায় সরব। মানুষের ব্যক্তি স্বার্থ লঙ্ঘন করতে এই বিল আনছে কেন্দ্র। এমনটাই অভিযোগ কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ ডিএমকের। বিরোধী আপত্তি উপেক্ষা করেই লোকসভায় পাশ হয়ে যায় এই বিল।
এই বিল প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রীর দাবি, ‘ভুয়ো ভোটার ধরতে এবং আর স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্যই এই সংশোধন।‘তবে এই বিল পেশের সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের পদত্যাগের দাবিতে সরব তৃণমূল এবং কংগ্রেস। লখিমপুর-কাণ্ডে মন্ত্রীর ছেলে অভিযুক্ত। আপাতত জেলবন্দি আশিস মিশ্র। একইভাবে শ্রীলঙ্কা নৌসেনা কয়েকজন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছে। তাঁদের মুক্তির দাবিতে এদিন সংসদে সরব হয়েছিল ডিএমকে-কংগ্রেস। এদিকে, নির্বাচন আইন (সংশোধিত) বিলকে সংসদীয় সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবিতে সরব ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। এদিন বিরোধী হল্লায় দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে সংসদের দুইকক্ষ। বিজেপির অভিযোগ, 'সংসদ অচল রাখতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হই-হট্টগোল করছে বিরোধীরা।'
অপরদিকে, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র এবং দুই নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ও অনুপ চন্দ্র পাণ্ডেকে বৈঠকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তারা। যা নিয়ে বিতর্ক বাধে। গত ১৫ নভেম্বর একটি চিঠি গিয়েছিল নির্বাচন কমিশনে। জানা যায়, চিঠিতে উল্লেখ ছিল, ‘নির্বাচনী সংস্কার ইস্যুতে ১৬ নভেম্বর বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি। সেই বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।’ নির্বাচন কমিশনের মতো স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থার প্রধানকে কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক আধিকারিক ডেকে পাঠাতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত ১৭ ডিসেম্বর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপরই পাঁচ রাজ্যের ভোটে কমিশনের নিপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হয় বিরোধী শিবির। সমাজের নানা মহল থেকে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ইস্যুতে শনিবার বিবৃতি দিয়ে কমিশনের দফতরে দেওয়া চিঠির ব্যাখ্যা দিয়েছে আইনমন্ত্রক। ওই ব্যাখ্য়ায় বলা হয়েছে যে, ‘আলোচনার বিষয়ে ধারণাপোষণকারী কমিশনের সচিব বা কোনও প্রতিনিধিকে অনলাইন বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছিল।’ জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে পিএমও-র আলোচনা হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল যে, পিএমও-র ওই চিঠি নিয়ে মুখ্যনির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ১৬ নভেম্বর যোগ দিয়েছিলেন অনলাইন বৈঠকে।
আইনমন্ত্রকের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, দীর্ঘদিনে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে ক্যাবিনেটের মত কমিশনকে জানাতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে পরবর্তী কথোপকথনটি ছিল একটি অ-আনুষ্ঠানিক এবং চূড়ান্ত প্রস্তাবের জন্য দু-তিন বিষয়ের দিক নির্দেশ।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন