নাগরিক অধিকারবাদী আইনজীবী নুসরত চৌধুরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মহিলা মুসলিম ফেডারেল বিচারক নিযুক্ত হলেন। বাইডেন প্রশাসন তাঁকে ওই পদে নিয়োগ করার পর মার্কিন সিনেটেও তাঁকে স্বীকৃতি দিল। তবে, এই স্বীকৃতি সহজে আসেনি। সিনেটের ভোটাভুটিতে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে (৫০-৪৯) তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হয়। তিনি ব্রুকলিন ফেডারেল আদালতে বিচারকের দায়িত্ব পেয়েছেন।
তিনি ফেডারেল বিচারক নিযুক্ত হওয়ার পর আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এই নিয়োগের প্রশংসা করেছে। কারণ, নুসরত চৌধুরি আমেরিকান সিভিল লিবার্টিড ইউনিয়নের ইলিনয় অঞ্চলে আইনি পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তার আগে নিউ ইয়র্কে এসিএলইউয়ের জাতিগত বিচার কর্মসূচির উপপরিচালক-সহ বিভিন্ন পদে ছিলেন।
তিনি মার্কিন ফেডারেল সরকারের নো ফ্লাই লিস্ট এবং মুসলিমদের ওপর নিউ ইয়র্ক পুলিশের নজরদারির বিরুদ্ধেও মামলা লড়েছেন। এছাড়াও অসংখ্য নাগরিক অধিকারবাদী মামলার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। যার জেরে ২০২১ সালে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর চাক শুমার তাঁকে ফেডারেল বেঞ্চে নিয়োগের সুপারিশ করেছিলেন। নুসরত জাহান চৌধুরিকে 'নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিশেষজ্ঞ' বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম হল, প্রেসিডেন্ট সমস্ত ফেডারেল বিচারক নিয়োগ করেন। তাঁর মনোনয়নের পর সিনেটে ভোটাভুটির মাধ্যমে ওই নিয়োগ নিশ্চিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি ভবন হোয়াইট হাউস বুধবার নুসরত চৌধুরির কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে হোয়াইট হাউস বলেছে, 'তিনি প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান, প্রথম মুসলিম আমেরিকান নারী, দ্বিতীয় মুসলিম আমেরিকান হিসেবে ফেডারেল আদালতের বিচারক হতে যাচ্ছেন।' এর আগে গত বছর নিউ জার্সির জেলা আদালতে প্রথম মুসলিম বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন জাহিদ এন কুরেশি।
আরও পড়ুন- নেতাজি অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, মনে করালেন দোভাল
নুসরতের বাবা নুরের আর চৌধুরি আমেরিকার শিকাগোর সেন্ট ম্যারিজ ন্যাজারেথ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। নুসরতের জন্মের আগেই তাঁর মা-বাবা বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। ২০১২ সালে বিয়ে করেছেন নুসরত। তাঁর স্বামী একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। বর্তমানে আমেরিকার ফেডারেল আদালতে ৮৭০ জন বিচারক আছেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন আছেন সুপ্রিম কোর্টে। ১৭৯ জন আছেন আপিল কোর্টে। আর, ৬৭৩ জন জেলা আদালতে নিযুক্ত।