কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বুধবার সকালে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এ নিয়ে আসা হয় উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে। আদালতের নির্দেশে এদিনই উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করা হবে। দিল্লি হাইকোর্ট এর আগে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেয় বিচার প্রক্রিয়া হাসপাতালের মধ্যেই শুরু করার।
এদিনের বিচার প্রক্রিয়া ক্যামেরায় বন্দী করা হবে। দিল্লি হাইকোর্ট গত ৭ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতকে এই নির্দেশ দেয়। তার ভিত্তিতেই আদেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। নিম্ন আদালতের বিচারপতি ধর্মেশ শর্মা জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে ক্যামেরায় তা ধরে রাখার কাজ। সেপ্টেম্বরের শুরুতেই নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করে গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
আরও পড়ুন: গৃহবন্দি করা হল সপুত্র চন্দ্রবাবু নাইডুকে
বয়ান নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হওয়ার আগেই ধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে এইমস-এ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ছাড়াও খুন এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবী, এবং নিহত হন নির্যাতিতার দুই আত্মীয়া। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে নিজের পথ থেকে সরাতেই ওই গাড়ি দুর্ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল সেসময় জেলে থাকা সেঙ্গার।
অভিযোগকারিণী ১৯ বছরের তরুণী জানিয়েছেন, ৪ জুন, ২০১৭ তারিখে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক সেঙ্গার এবং অন্যান্য কয়েকজন মিলে তাঁকে সেঙ্গারের বাড়িতে গণধর্ষণ করেন। সেসময় নাবালিকা ছিলেন তিনি। গত ৯ অগাস্ট দিল্লির আদালতে সেঙ্গার এবং তার সহযোগী শশী সিংয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় চার্জ গঠন করা হয়। শশী সিং নিগৃহীতাকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ফুসলিয়ে সেঙ্গারের বাড়িতে নিয়ে যায়। দুজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ), ৩৬৬ (বিবাহের উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারা এবং পকসো আইনের অন্যান্য ধারায় চার্জ গঠিত হয়েছে।
এরপর ১৩ অগাস্ট তরুণীর বাবাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে খুন করার অভিযোগ আনে দিল্লির আদালত। সেঙ্গার এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে নিহত ওই ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা এবং অস্ত্র আইনের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও আনে আদালত। এই ঘটনায় এক পুলিশ কর্মীও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টিকে "বৃহত্তর ষড়যন্ত্র" বলে উল্লেখ করেন নিম্ন আদালতের বিচারক। আদালত জানায়, নির্যাতিতার বাবার মৃতদেহে ১৮টি ক্ষতের চিহ্ন মিলেছিল। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে থানার মধ্যে মারা হয় তাঁকে। এবং এই কাজ চলাকালীন দিল্লি থেকে সেঙ্গার পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।