যোগী সরকার 'হালাল শংসাপত্র'-সহ পণ্য বিক্রির ওপর উত্তরপ্রদেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বিবেচনা করছে। উত্তরপ্রদেশের খুচরো পণ্যগুলিতে এই জাতীয় শংসাপত্র সরবরাহ করার কারণে লখনউয়ের একটি কোম্পানি এবং তিনটি সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তার পরেই উত্তরপ্রদেশ সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সরকারের উদ্দেশ্যের কথা একজন সরকারি মুখপাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন। শুক্রবার লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের হয়েছে। সরকারি মুখপাত্র বলেন, 'কিছু কোম্পানি একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের বিক্রি বাড়ানোর জন্য পণ্যগুলোকে হালাল-এর তকমা দেওয়া শুরু করেছে। এটা, জনগণের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করার মত। সেই কথা মাথায় রেখে এই ধরনের পণ্য বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।'
হালাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, চেন্নাইয়ের একটি সংস্থা। তার বিরুদ্ধেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও মামলা দায়ের হয়েছে নয়াদিল্লির জমিয়ত উলেমায়ে হিন্দ হালাল ট্রাস্ট, মুম্বইয়ের হালাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, এবং মুম্বইয়ের জমিয়ত উলেমা সংস্থার ওপর। এর মধ্যে একাধিক সংস্থা, তাদের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সংস্থাগুলো দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশীদার। তারা নাকি জঙ্গি সংগঠনগুলোকেও অর্থ দেয়। তাঁর এই অভিযোগ সম্পর্কে লখনউয়ের বাসিন্দা শৈলেন্দ্রকুমার শর্মা লিখেছেন, 'এটা আমার নজরে এসেছে যে কিছু কোম্পানি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকেদের মধ্যে তাদের পণ্যের বিক্রি বাড়াতে কিছু পণ্যকে হালাল হিসাবে সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করেছে। প্রতারণার মাধ্যমে আর্থিক লাভের জন্য এটি করা হচ্ছে। আপনি রাজ্যজুড়ে (উত্তরপ্রদেশ) বাজারে এই জাতীয় পণ্য দেখতে পাবেন। এটি জনগণের বিশ্বাসের সঙ্গে খেলা করার মত ব্যাপার। হালালের শংসাপত্রগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। এমনকী, এনিয়ে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- কীভাবে শনাক্ত করবেন অডিও বা ভিডিও জাল কি না, জানুন ১০ উপায়
অভিযোগে বলা হয়েছে, 'এই কোম্পানিগুলো একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিশানা করেছে। সার্টিফিকেট তৈরি করছে।' শৈলেন্দ্রকুমার শর্মা বলেন, 'আমার সন্দেহ যে, এই সব কাজ করে পাওয়া অর্থ বা সুবিধা অসামাজিক কাজে লাগানো হচ্ছে। অথবা, দেশবিরোধী সংগঠনগুলোকে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন বিউটি অয়েল, সাবান, টুথপেস্ট- ইত্যাদিকে পর্যন্ত হালাল সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। অথচ, এই জাতীয় পণ্যগুলোর জন্য হালাল শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই। আসলে, এর মাধ্যমে একটি সম্প্রদায়ের কাছে বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, এই সংস্থাগুলির দেওয়া হালাল শংসাপত্র ছাড়া পণ্য ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে অন্য সম্প্রদায়ের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এটা শুধু অর্থনৈতিক অথবা বৈষয়িক লাভের জন্যই নয়। সম্প্রদায়ের মধ্যে সমাজে বিদ্বেষ সৃষ্টির জন্যও করা হচ্ছে। এটা দেশকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রের অংশ।' অভিযোগেও এমনটাই বলা হয়েছে।