চাদর মোড়া কোনও বস্তু হাতে রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলেছে যুবক। চাদর দিয়ে টপ টপ করে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। যুবকের জামায়-ও রক্তের দাগ। রাস্তাতেও রক্তের লাল দাগ। এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব সকলে। খবর যায় পুলিশে। মাঝরাস্তাতেই পুলিশ আটকায় ওই যুবককে। তারপর বছর ২৮শের ওই ব্যক্তি নিজেই বলে তাকে যেন গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু কেন? চাদরে মোড়া রয়েছে নিজের স্ত্রীর কাটা মুণ্ড। যা নিয়ে থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল সে। পরে জানা যায়, কাস্তের কোপে নিজের স্ত্রীকে খুন করছে অখিলেশ রাওয়াত। শনিবারের নৃশংস এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার জাহাঙ্গিরাবাদের।
বারাবাঁকির পুলিশ সুপার অরবিন্দ চতুর্বেদী বলেন, 'শনিবার সকালে স্বামী অখিলেশের সঙ্গে ঝগড়া হয় স্ত্রী রঞ্জনার। রাগের মাথায় নিজের স্ত্রীকে কাস্তে দিয়ে আক্রমণ করে সে। এতেই তার স্ত্রীর মুণ্ড দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে য়ায়। সেই মুণ্ড কাপড়ে বেঁধে বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে তিন কিমি দূরে থানার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছিল অখিলেশ রাওয়াত। স্থানীয়দের থেকে পুলিশ খবর পেয়েই মাঝরাস্তায় ধরে ফেলে তাকে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।'
আরও পড়ুন: ভারতে করোনা থাবা, কেরালাতেই দ্বিতীয় আক্রান্তের খোঁজ
পুলিশের সার্কেল (শহর) অফিসার সুশীল কুমার সিং বলেন, 'অভিযুক্ত অখিলেশ রাওতের হাতে ও জামায় রক্তের দাগ ছিল। দম্পতি পরিবারের অন্যন্যদের সঙ্গে বসবাস করলেও শনিবার তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না।'
অভিযুক্ত অখিলেশ রাওয়াতের স্ত্রীও বারাবাঁকিরই বাসিন্দা। গত আড়াই মাস আগেই অখিলেশ-রঞ্জনার সদ্যজাত কন্যা সন্তানের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে বাপের বাড়িতে থাকলেও চারদিন আগেই শ্বশুরবাড়িতে ফিরেছিল রঞ্জনা। বারাবাঁকির পুলিশ সুপারের কথায়, 'প্রতিবেশিদের বয়ান অনুশারে রঞ্জনার বাড়ি ফিরে আসা থেকেই নিয়মিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা লেগে থাকতো। খুনের প্রমাণ হিসাবে অকুস্থল থেকে বেশ কিছু ভাঙা চুড়ি মিলেছে। মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই অখিলেশ হতাশায় ভুগছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবাশীরা। অভিযুক্তের বাড়ির লোকেরাও একই কথা বলেছেন।'
এই ঘটনায় অখিলেশ রাওয়াতের বিরুদ্ধে মৃতা রঞ্জনার পরিবার মামলা রুজু করেছে। এই খুনের পিছনে পণ সংক্রান্ত বিষয়ও জড়িয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-বি (বিয়ের সাত বছরের মধ্যে পণ সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে মৃত্যু) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারাবাঁকির পুলিশ সুপার।
Read the full story in English