উত্তরপ্রদেশের এক শহরের একটি হোম থেকে সোমবার ২৪ জন কিশোরীকে উদ্ধার করল পুলিশ। ওই হোমে মেয়েদের উপর যৌন অত্যাচার চালানো হত বলে অভিযোগ। ওই হোমের ম্যানেজার দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সুপারিনটেন্ডেন্টকেও।
রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী রীতা বহুগুণা জোশী জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তদন্তের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের দল গঠন ওই শহরে পাঠিয়েছেন। আজ রাতেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে জেলাশাসককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই হোমে মোট ৪২ জন আবাসিকের ১৮ জন নিখোঁজ। হোমটিকে আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে. এক পুলিশ অফিসারকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘‘হোমের ৪২ জন আবাসিকের মধ্যে ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ জন এখনও নিখোঁজ। আমরা হোমটি সিল করে দিয়েছি।’’
ওই হোমটিরই এক আবাসিক এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই কিশোরীর বক্তব্য,‘‘সাদা, কালো, লাল রঙের গাড়িতে করে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া হত। ওরা সকালে কাঁদতে কাঁদতে ফিরত।’’
সংবাদসংস্থা এএনআই-কে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘আমরা যখন হোম বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ওখানে পৌঁছই, তখন হোমের ডিরেক্টর আমাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেন। আজ সকালে একটি মেয়ে ওখান থেকে পালিয়ে আমাদের কাছে আসার পর আমরা ওখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারি। তদন্তে অনেক বড় বড় ব্যাপার উঠে এসেছে। ২৪ জনকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা গেছে।’’
এই হোমটি গত বছরই সিবিআই বন্ধ করে দিতে বলেছিল, জানিয়েছেন শিশু কল্যাণ মন্ত্রী রীতা বহুগুণা জোশী। এএনআই-কে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘গত বছর সিবিআই জানিয়েছিল, এই হোমটি বেআইনি ভাবে চালানো হচ্ছে। আবাসিকদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে হোম বন্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশ মানা হয়নি।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘বেআইনি কাজকর্ম চলছে বলে অগাস্টের ১ তারিখে এই হোম তৎক্ষণাৎ বন্ধ করার জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়। যে শিশুটি অভিযোগ দায়ের করেছিল, তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে সোমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মুজফফরপুরের সরকারি হোমে নাবালিকাদের উপর যৌন লাঞ্ছনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, হোম চালানোর জন্য বিভিন্ন এনজিও-কে যে অনুদান দেওয়া হয়, তাতে কাটছাঁট শুরু করা হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এনজিও-কে ব্যবহার করব কেন? এ ধরনের শিশুদের দেখভালের জন্য সরকারেরই টাকা খরচ করা উচিত।’’
দিল্লির যন্তর মন্তরে বিরোধী নেতাদের এ ইস্যুতে মোমবাতি মিছিল করার ঘটনা যে তিনি মোটেই ভালোভাবে নেননি, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নীতীশ। তিনি বলেছেন, ‘‘যারা ধর্না দিচ্ছে তাদের নিজেদের দিকে তাকিয়ে মনে করে দেখা উচিত, অতীতে মহিলাদের সম্পর্কে তারা কী ধরনের মন্তব্য করেছে।’’