প্রায় ৯ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের ইতি! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ দুপুর ২:৩০ টে নাগাদ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে দিল্লির কুতুব মিনারের থেকেও লম্বা নয়ডার টুইট টাওয়ার। রবিবার বিশেষ বিষ্ফোরকের সাহায্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভেঙ্গে ফেলা হবে নয়ডার সুপারটেক টুইন টাওয়ার। ২০১৩ সালে আইনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবৈধ ভাবে নির্মাণ হয় এই বিশেষ সুপারটেক টুইন টাওয়ার। প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়েই তৈরি হয় এই সুপার টেক টুইন টাওয়ার। এরপরই স্থানীয় এমারেল্ড কোর্ট সোসাইটির বাসিন্দারা দ্বারস্থ হন সুপ্রিম কোর্টের। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রবিবার দুপুর ২.৩০ টে নাগাদ ভেঙে ফেলা হবে বেআইনিভাবে তৈরি এই নয়ডার টুইন টাওয়ার।
এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই অনেকের মনেই এসেছে যে টুইন টাওয়ার ভাঙার জন্য এত হৈ-চৈ কেন? কেন বিস্ফোরকের সাহায্যে দুটি আকাশছোঁয়া ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে? টাওয়ার বিস্ফোরণ ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল কী?
উল্লেখ্য ২০২১ সালের আগস্টে, সুপ্রিম কোর্ট টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। রবিবার টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার পরিপ্রেক্ষিতে, এমারেল্ড কোর্ট এবং এটিএস ভিলেজের কাছাকাছি দুটি সোসাইটির প্রায় ৫হাজার বাসিন্দাকে রবিবার সকাল সাতটার মধ্যে তাদের বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টুইন টাওয়ারের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও ব্যক্তি বা প্রাণীর থাকার কোন অনুমতি নেই। উভয় টাওয়ারকে ধ্বংস করতে ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। টুইন টাওয়ার ভেঙে যে ৫৫ থেকে ৮৫ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ বের হবে, যা অপসারণ করতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেখে নিন আজকের সুপার টেক টুইট টাওয়ার ধ্বংসের কর্মকাণ্ড একনজরেঃ
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ২৮শে আগস্ট রবিবার অবৈধ সুপারটেক টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলা হবে। রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ৪০ তলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে।
টুইন টাওয়ার ধ্বংস করতে ৩৭০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হবে। রবিবার বিপুল সংখ্যক পুলিশ টুইন টাওয়ারের চারপাশে এক কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়েছে।
টুইন টাওয়ারের আশেপাশের রাস্তা সম্পুর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকে কোনভাবেই সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন স্থানে ডাইভারশন করা হয়েছে এবং ৫টি রাস্তাও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের সময় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে শহরের বড় বড় হাসপাতালগুলোতে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। জেপি হাসপাতাল, রিয়ালিটি হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালে সেফ হাউস তৈরি করা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে অ্যাম্ব্যলেন্সও।
টুইন টাওয়ারের বিস্ফোরণের আগে অর্থাৎ ২৮শে স্থানীয় সোসাইটির লোকজনকে সকাল ৭টায় বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । হাজার হাজার মানুষ খুব ভোরে সোসাইটি ছেড়ে চলে যাবেন নিরাপদ স্থানে এবং বিস্ফোরণের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফিরে আসবেন।
টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার সময় আশেপাশের সোসাইটিতে বসবাসকারী লোকজনকে তাদের ছাদে ও বারান্দায় যেতে দেওয়া হয় না। একই সঙ্গে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টুইন টাওয়ারের আশপাশের এলাকাকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে।