বন্দে মাতরম-এর সুরে '৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন, মার্কিন দূতাবাসের এমন অভিনব উদ্যোগে আপ্লূত আপামোর দেশবাসী। মার্কিন দূতাবাস প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে একটি ভিডিওটি প্রকাশ করে লিখেছে, '৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতকে অভিনন্দন! বন্দে মাতরম সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আমরাও প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করছি! এই ভিডিওতে মার্কিন আধিকারিক রাঘবনকে বাঁশি বাজাতে, গিটার হাতে স্টেফানিকে দেখা যায়। বন্দে মাতরম গাইছেন ভারতীয় গায়িকা পবিত্র চারি। এর আগে, মার্কিন বিদেশ মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন, কর্তব্যপথে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী, রেড রোডের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে সামিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা। দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে হাজির বাংলার ট্যাবলো। এবারের থিম দুর্গাপুজো। সঙ্গে হচ্ছে মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ু। সংবাদ সংস্থা এএনআই সেই ছবি টুইট করেছে। কর্তব্য পথে কুচকাওয়াজ, উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রেড রোডে পুলিশ মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আজকের ভাষণে বলেন, ‘অর্থনৈতিক ভাবে অনিশ্চয়তায় ডুবে গোটা বিশ্ব। তার মধ্যেও বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ভারতের। অতিমারিতে দেশের দরিদ্র-দুঃস্থ মানুষদের মুখে অন্ন জুগিয়েছে দেশের সরকার। তাঁদের নিরাপত্তার আশ্বাস জুগিয়েছে’
সমগ্র ভারত আজ প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করছে। আজ ‘কর্তব্য পথ’-এ দেশের সামরিক শক্তি, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং আরও অনেক অনন্য উদ্যোগের সাক্ষী থাকতে চলেছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। এবার প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে এই প্রথম কোন মিশরীয় রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে।
চারদিনের ভারত সফরে এসেছেন আল-সিসি। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে দেশবাসীকে প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছেন, “প্রজাতন্ত্র দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানটিও বিশেষ ভাবে স্মরণীয় কারণ আমরা স্বাধীনতার অমৃত উৎসব চলাকালীন এই উৎসব উদযাপন করছি। দেশের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে চাই। সমগ্র ভারতবাসীকে প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা!”
প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি দেশের বীর সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ওয়ার মেমোরিয়ালে’ পৌঁছে শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।সেই সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, সিডিএস এবং তিন সেনাপ্রধানও তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে ভারতে ইসরায়েলি দূতাবাস। এই উপলক্ষে দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি চমৎকার ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। দূতাবাস ভিডিও শেয়ার করে বলেছে, ‘প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে সকল ভারতীয়দের আন্তরিক শুভেচ্ছা, ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উদযাপনে আমরা যোগ দিতে পেরে গর্বিত’।
ভারত চলতি বছর ৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সেজে উঠেছে রাজধানী দিল্লি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও একটি বিশেষ কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে, যার নেতৃত্ব দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি। এবারের কুচকাওয়াজে স্বনির্ভর ভারত, নারীর ক্ষমতায়ন এবং উদীয়মান ভারত নিয়ে ‘বিশেষ প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ থেকে কুচকাওয়াজ শুরু করবেন যেখানে দেশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। কুচকাওয়াজে ১৭টি রাজ্যের ট্যাবলো অংশ নেবে। ভারতের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামরিক শক্তির ভান্ডার প্রদর্শন করা হবে।
ব্রিটিশ আমলের রাজপথের নয়া নামকরণই হয়নি শুধুমাত্র, নতুন করে ঢেলে সাজানোও হয়েছে কর্তব্যপথকে। নামকরণের পর এই প্রথম বার কর্তব্যপথে প্রজাতন্ত্রের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হল। দেশের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি তুলে ধরা হয় ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রও। ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতির পর এ বার বাংলার ট্যাবলো দেবী দুর্গাকে নিয়েই।
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে বরাবরের মতো এ বারও দিল্লিতে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, তার জন্যই ৬ হাজার সেনা নামানো হয়েছে। কর্তব্যপথ মুড়ে ফেলা হয়েছে হাই রেজলিউশনের প্রায় ১৫০ সিসি ক্যামেরায়। প্রজাতন্ত্র দিবসে মিশরের সশস্ত্র বাহিনীও ভারতীয় সেনার সঙ্গে কুচকাওয়াজে সামিল হয়েছেন। এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ১৭টি এবং বিভিন্ন মন্ত্রকের ৬টি ট্যাবলো থাকছে। তাতে নয়া ভারতের আধুনিক রূপকেই তুলে ধরা হবে, যার মধ্যে থাকছে স্বদেশি ক্ষমতা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়ন।