মার্কিন বিদেশ দফতরের রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়াল নয়াদিল্লির। ভারতে একাধিকবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এমন উদ্বেগের কথা উল্লেখ মঙ্গলবার প্রকাশিত সেই রিপোর্টে। তবে জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে সন্তোষ প্রকাশ করেছে মার্কিন বিদেশ দফতরের সেই রিপোর্ট। সংবিধানের ৩৭০ ধারা উপত্যকার ওপর থেকে তুলে নেওয়ার পর অবস্থা অনেক ভালো জম্মু-কাশ্মীরের। এমনটাই উল্লেখ রিপোর্টে। ‘২০২০ কান্ট্রি রিপোর্ট অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ নামক ওই রিপোর্টে উল্লেখ, অন্তত ১২টি ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ভারতে।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল খুন, থানায় পুলিশের নির্যাতন, জেলা আধিকারিকদের নিগ্রহ, সরকারি সংস্থার দ্বারা অযৌক্তিক গ্রেফতারি এবং জেলের ভয়াবহ অবস্থা।মার্কিন এই রিপোর্টে দাবি, ‘ভারতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অনেক ক্ষেত্রে খর্ব করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বেআইনি ভাবে সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করে সংবাদপত্রের বাক-স্বাধীনতা হরণ করার চেষ্টা হয়েছে।‘
বিডেন প্রশাসনের বিদেশ দফতর জানিয়েছে, যে সব সংস্থা বা ব্যক্তি সমানাধিকারের জন্য লড়াই করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও অনেক সময় মিথ্যে মামলা দায়ের হয়েছে। কেউ সরকার-বিরোধী মন্তব্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করে হেনস্থা করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা, ‘বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে বেআইনি ভাবে। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতির সঙ্গে আপস কড়া হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রে আবার অতিসক্রিয়তা দেখিয়েছে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা। এছাড়া লঙ্ঘিত হয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা‘
ভারতে এখনও শিশু শ্রম রয়েছে কিংবা মহিলাদের উপর জোর খাটানোর মতো সমস্যা রয়েছে বলেও জানিয়েছে এই রিপোর্ট।
অবশ্য জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ঢালাও প্রশংসা করা হয়েছে রিপোর্ট। বলা হয়েছে, সরকার ধীরে ধীরে জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে অনেক বিধিনিষেধ সরিয়েছে। সুরক্ষার কড়াকড়ি কিংবা ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় উপত্যকার মানুষদের যে সমস্যা হচ্ছিল তা অনেকটাই লাঘব হয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে জম্মু-কাশ্মীরের একাধিক জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু হলেও এখনও ৪জি পরিষেবা অনেক জায়গাতে শুরু হয়নি।
এছাড়া রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া ও উপত্যকায় নির্বাচন করানোর মতো পদক্ষেপ করেছে ভারত সরকার। জম্মু-কাশ্মীরে এখনও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ও জঙ্গিদের হাতে নিরাপত্তারক্ষী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পরেও যে ভাবে সরকার সেখানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে তার প্রশংসনীয়। এমনটাই উল্লেখ এই রিপোর্টে।
এর আগেও ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করেছিল আমেরিকা। সেই রিপোর্ট খারিজ করেছিল ভারত। এখন দেখার এই নতুন রিপোর্টের ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির কী প্রতিক্রিয়া হয়।