ভারত ও ইরানের মধ্যে চাবাহার বন্দর চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরই মুখ খোলে আমেরিকা। সেদেসের বিদেশমন্ত্রকের ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত পটেল বলেন, 'ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে, সব পক্ষেরই সেটা মাথায় রাখা উচিত। এদিকে আজ কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এসে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, 'আমি কিছু মন্তব্য দেখেছি, এই চুক্তি আসলে সকলের লাভের জন্যই। আমার মনে হয় না এটা নিয়ে সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত।'
ইরানের চাবাহার বন্দর ৭২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই বন্দরের মাধ্যমে ভারত, ইরান, আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, রাশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহন করা হবে। ইরানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে ভারত ১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সোমবার এই চুক্তি করা হয়। ইরানের সঙ্গে সহযোগিতায় ভারত এই প্রকল্পে কাজ করছে। এটি মধ্য এশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে সাহায্য করবে।
তবে ভারত ও ইরানের মধ্যে এই চুক্তির পরই হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে আমেরিকা। এখন আবারও ভারতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আমেরিকা বলেছে, 'ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করা যে কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, তিনি জানেন যে ইরান ও ভারত চাবাহার বন্দর সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে'।
বিদেশমন্ত্রকে ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত পটেল বলেছেন, 'ইরান ও ভারত চাবাহার বন্দর সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বলে খবর আমরা অবগত। আমি চাই ভারত সরকার চাবাহার বন্দর এবং ইরানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তার বৈদেশিক নীতির উদ্দেশ্য সম্পর্কে কথা বলুক'।
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দরে ইরানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শুধু বলতে চাই ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং আমরা সেগুলি বজায় রাখব। পটেল বলেছেন, কোনও সংস্থা, যে কোনও দেশ যারাই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার চিন্তা করছে, তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত'।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আমেরিকার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'এই প্রকল্পের ফলে পুরো এলাকা উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, আমেরিকা নিজেই অতীতে চাবাহারের ব্যাপক প্রাসঙ্গিকতার প্রশংসা করেছে'। তিনি বলেন, 'আপনি যদি চাবাহার বন্দরের প্রতি আমেরিকার মনোভাব দেখেন, আমেরিকা এই সত্যকে উপলব্ধি করছে যে চাবাহারের ব্যাপক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে…"। এই চুক্তি নিয়ে কারও কোন সংকুচিত দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত নয়। এই প্রকল্পে সবাই লাভবান হবে'।
ভারত ও ইরানের মধ্যে শুরু থেকেই এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে আমেরিকা। এখন পর্যন্ত চাবাহার বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তানে আড়াই মেট্রিক টন গম ও দুই হাজার টন ডাল পরিবহন করা হয়েছে।