হিজাব বিতর্কের রেশ থামতে না-থামতেই এবার কর্নাটকে জন্ম নিল মসজিদে লাউডস্পিকার বেধে আজান পাঠের বিতর্ক। কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মসজিদের গম্বুজে লাউডস্পিকার বেঁধে আজান দেওয়ার প্রতিবাদে সরব হয়েছে। সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলে কর্নাটকের মন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা মঙ্গলবার মুখ খুললেন। মন্ত্রী জানান, মুসলিম সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জন করে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। অবশ্যই পড়ুয়া ও রোগীদের স্বার্থ মাথায় রাখা উচিত।
মসজিদের শীর্ষে মাইক বেঁধে আজানপাঠ নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই বিতর্কে
গত সপ্তাহেই ঢিল ছোড়েন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। তিনি মসজিদের মাথায় মাইক বেঁধে আজান দেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হন। এইভাবে মাইক বাঁধাকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। রাজ ঠাকরে এই প্রসঙ্গে হুমকির সুরে বলেন, 'যদি মসজিদের মাথায় লাউন্ডস্পিকার বেঁধে আজানপাঠ বন্ধ করা না-হয়, তাহলে মসজিদের বাইরে তারস্বরে হনুমান চালিশা পাঠ করা হবে।'
নবনির্মাণ সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অবশ্য সমর্থন করেননি কর্নাটকের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ঈশ্বরাপ্পা। মন্ত্রী বলেন, 'এটা কোনও প্রতিযোগিতা না। মসজিদের মাথায় মাইক বেঁধে আজান পাঠ করলে পালটা মন্দিরের চূড়ায় মাইক বেঁধে হনুমান চালিশা পাঠ কোনও অর্থেই যুক্তিযুক্ত না। এতে সমস্যা মেটার বদলে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষই বরং বাড়বে। বরং, মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদেরই দেখতে হবে যাতে যখন তখন মসজিদের মাথায় মাইক বেঁধে আজান দেওয়া না-হয়। দরকারে মসজিদের ভিতরে মাইক বাঁধুন। কারণ, ভক্তি-শ্রদ্ধার নামে সাধারণ মানুষ এবং প্রতিবেশীদের বিরক্ত করাটা ঠিক না।'
ঈশ্বরাপ্পার দাবি, তাঁদের সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই মসজিদে মাইক বেঁধে আজান দেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। এই সমস্যা মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের আস্থা অর্জন করেই তাঁরা মেটাতে চান। তার বদলে কর্নাটকে রাম সেনা এবং মুম্বইয়ে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা যেভাবে পালটা হনুমান চালিশা পাঠের কথা বলছে, সেটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, সরকার কোনও ধর্মীয় প্রতিযোগিতা চায় না। প্রার্থনাকারীদের প্রার্থনা করা নিয়ে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু, প্রার্থনার জন্য রোগী ও পড়ুয়াদের অসুবিধা হলেই সরকারের আপত্তি আছে।
Read story in English