বছর পেরোলেই দরজায় কড়া নাড়বে লোকসভা ভোট। উনিশের ভোটযুদ্ধে মোদি বাহিনীকে দুরমুশ করতে বিরোধীদের হাতে যেসব ইস্যু রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম কর্মসংস্থান। মোদি জমানায় দেশের যুবকদের কর্মসংস্থান ইস্যুতে প্রায়শই সুর চড়ায় বিরোধীরা। এবার বিজেপি শাসিত রাজ্যেই কর্মসংস্থানের কঙ্কালসার চেহারা সামনে এল। এ আবার যেমন তেমন বিজেপি শাসিত রাজ্য নয়। দেশের মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক পটভূমি উত্তরপ্রদশেই কর্মসংস্থান ঘিরে ফের প্রশ্ন উঠল। সরকারি চাকরির জন্য ৬২টি পিওন পদ খালি। যে পদের জন্য আবেদনকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখলে আপনার চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
পিওন পদের জন্য আবেদন করেছেন রিসার্চ স্কলার, কেউবা আবার স্নাতক তো কারও আবার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। আর এরকম আবেদনকারীদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। প্রায় ৯৩,০০০ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। ভাবুন, ৬২টি পদের জন্য ৯৩,০০০ আবেদনপত্র! সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, প্রতি পদ পিছু গড়ে ১,৫০০ আবেদন জমা পড়েছে।
আবেদনকারীদের মধ্যে প্রায় ৩,০০০ জনের বায়োডাটা বলছে, তাঁদের রিসার্চ ডিগ্রি রয়েছে। ২০,০০০-এর বেশি আবেদনকারীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। ৫০,০০০ আবেদনকারী স্নাতক, যাঁরা পিওন পদের জন্য আবেদন করেছেন। পিওন পদের জন্য যেখানে ন্যূনতম যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি পাশ ও বাইক চালানোর ক্ষমতা, সেখানে এত উচ্চশিক্ষার আবেদনকারীদের দেখে তাজ্জব অনেকেই।
আরও পড়ুন, জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের নামে স্টেশন ও শহর ঝাড়খণ্ডে
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের টেকনিক্যাল বিভাগে পিওন পদের আবেদন করা যাচ্ছে। টেলিকম সার্ভিসের দফতরের দায়িত্বে থাকা প্রমোদ তিওয়ারি নামের এক পুলিশ আধিকারিক দাবি করেন, এই প্রথমবার যে তাঁরা এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তা নয়, গত কয়েকবছরেও এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে, উত্তরপ্রদেশে রাজ্য সচিবালয়ে ৩৬৮টি পিওন পদের জন্য ২৩ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল, যার মধ্যে ২৫০ জনেরই রিসার্চ ডিগ্রি ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই লখনউয়ে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
যোগী রাজ্যের মতো রাজনৈতিক দিক থেকে অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ বিজেপি শাসিত রাজ্যের বেকারত্বের এই চেহারা দেখে কর্মসংস্থান ইস্যু যে আবারও মাথাচাড়া দিল, সেটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।