উত্তরপ্রদেশে নির্যাতিতা কিশোরীর বাবার মৃত্যুর ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসল যোগী সরকার। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও তাঁর বাবার হেফাজতে মৃত্যুর তদতন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনায় রিপোর্ট জমা দিয়েছে বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা (সিট)। এতেই শেষ নয়, অপরাধের ঘটনায় যে দলের নেতাদেরও রেয়াত করা হবে না, কার্যত সেই বার্তা দিতেই এবার বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেরেঙ্গের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় রিপোর্ট জমা দেওয়ার পাশাপাশি একটি ভিডিও ক্লিপও পেশ করে সিট। পুলিশের সামনেই বিজেপি বিধায়কের ভাই অতুল সিং তাঁকে হেনস্থা করেছে বলে ওই ভিডিওতে দাবি করেছেন কিশোরীর বাবা। গত মঙ্গলবার কিশোরীর বাবাকে মারধরের অভিযোগে বিজেপি বিধায়কের ভাই অতুল সিংসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিটের রিপোর্টের পাশাপাশি কারা বিভাগের ডিআইজি ও উন্নাও জেলাশাসকলের থেকে দুটি আলাদা রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন লখনউয়ের এডিজি রাজীব কৃষ্ণ। ইতিমধ্যেই কিশোরীর বাবার মৃত্যুর ঘটনায় ২ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। একইসঙ্গে জেলা হাসপাতালে কিশোরীর বাবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে আরও ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, উত্তরপ্রদেশে হেফাজতে কিশোরীর বাবার মৃত্যু, আতঙ্কে ঘরছাড়া কিশোরী
২০১৭ সালের জুন মাসে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেরেঙ্গের বিরুদ্ধে। বছর ঘুরলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে কিশোরী। এমনকি, একসময়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথেরও দ্বারস্থ হয় ওই কিশোরী। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। গত রবিবার এ ঘটনা চাঞ্চল্যকর মোড় নেয়। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। এদিকে গত ৩ এপ্রিল কিশোরীর বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। বিজেপি বিধায়ক ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন কিশোরীর বাবা। পুলিসের কাছে পাল্টা কিশোরীর বাবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানানো হয়। গত সোমবার হেফাজতে কিশোরীর বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরেই এ ঘটনা নয়া মোড় নেয়।
আপাতত ঘরছাড়া কিশোরী ও তাঁর মা। এখন সরকারি গেস্ট হাউসে রয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।