বিজেপি বিধায়ক ও তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা মেয়েকে ধর্ষণ করেছে, এমন অভিযোগ করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি। সেই অভিযোগকারীর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু ঘটেছে। গত রবিবার অষ্টাদশী ওই তরুণী সপরিবারে মুখ্যমন্ত্রীর লখনউয়ের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁর বাবকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। এ ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে যোগী সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে যোগী আদিত্যনাথের বসার পর থেকেই উত্তরপ্রদেশে অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে বৈ কমেনি। বিভিন্ন ঘটনার দৌলতে বার বার খবরের শিরোনামে এসেছে যোগীরাজ্য। এবার আরও এক অপরাধের সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশের মানুষ। যে ঘটনায় যোগী শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে সরাসরি নাম জুড়েছে বিজেপি বিধায়কের। গত বছর তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে। বারবার অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। এমনকি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে আত্মহত্যারও হুমকি দেন ওই তরুণী। সেইমতো, রবিবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। পরে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। নির্যাতিতার বাবাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পেটব্যথা ও বমি নিয়ে হাসপাতালে তরুণীর বাবাকে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় তরুণীর বাবার। পুলিশ হেফাজতেই নির্যাতিতার বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ ঘটনাতেই অস্বস্তি বেড়েছে যোগী সরকারের।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুন মাসে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার বাঙ্গেরমাউ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গেরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। গত ১ বছর ধরে বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা না হওয়ায় শেষমেশ নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন নির্যাতিতা। সংবাদসংস্থা এএনআইকে ওই তরুণী জানান যে, ‘‘অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে, আত্মহত্যা করব’’। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েও যে কোনও লাভ হয়নি, সেকথাও জানিয়েছেন তরুণী। এমনকি, এফআইআর দায়ের করার পর তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণী।
অন্যদিকে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই বিজেপি বিধায়ক কার্যত সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন কুলদীপ। তিনি আরও বলেন যে, নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার ভেবেছিলেন ওঁদের আমি সাহায্য করব। তাঁকে যে নানাভাবে অপমান করা হয়েছে সে ব্যাপারেও মুখ খুলেছেন কুলদীপ। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই যে তাঁর নামে এসব রটানো হচ্ছে, সেকথাও স্পষ্ট করে বলেছেন বিজেপি বিধায়ক। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে আসল অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন ওই বিজেপি বিধায়ক।
এ ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ডিআইজি(আইনশৃঙ্খলা)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় পুলিশের তরফ থেকে কোনও খামতি থাকলে, সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ডিআইজি। ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় রবিবার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।