উত্তরকাশীতে ৪০ শ্রমিক আটকে থাকা একটি নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে না-পারার জেরে উদ্ধারকারীরা নতুন কৌশল নিয়েছেন। তাঁরা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে হালকা স্টিলের পাইপের তৈরি প্যাসেজ তৈরি করছেন। যাতে, সেখানে দিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকরা হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন। রবিবার সকাল ৫টা ৩০ নাগাদ উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার সিল্কিয়ারা এবং দান্দলগাঁওকে সংযুক্ত করার জন্য যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের নির্মাণাধীন টানেলটি ভেঙে পড়ে। যদিও প্রশাসন দাবি করছে, আটকে থাকা শ্রমিকরা নিরাপদ। তাঁদের সঙ্গে ওয়াকিটকির মাধ্যমে যোগাযোগ করা গেছে। জল সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত একটি পাইপের মাধ্যমে তাঁদের খাদ্য এবং অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু, বিষয়টি হল, এখনও তাঁদের উদ্ধার করা যায়নি। আর, আটকে থাকার পর ইতিমধ্যেই আড়াই দিন কেটে গেছে।
রাজ্য সরকারের জারি করা এক বিবৃতি অনুযায়ী, ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, এলএন্ডটি, তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন এবং জাতীয় মহাসড়ক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই উদ্ধার চালানোর ব্যাপারে পরামর্শ করা হচ্ছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড প্রথম দুই দিনে ভারী খননকারী মেশিন ব্যবহার করে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করার পরিকল্পনা করেছিল। তার সঙ্গে, 'শটক্রিট পদ্ধতি' ব্যবহার করে আরও ধ্বংসাবশেষ তৈরি হওয়া রোধ করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, আংশিকভাবে সফল হয়েছে। এমনিতে শটক্রেটিং এর অধীনে, ধ্বংসাবশেষ সরানোর সঙ্গেই কংক্রিটের আরও পড়ে যাওয়া রোধ করা যায়। সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ ও সেট প্লেট বসিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য নিরাপদ পথ তৈরিরও চেষ্টা চলছিল। কিন্তু, টানেলের ওপরের অংশ থেকে বারবার পড়ে যাওয়া আরও ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারকারীদের সেই পরিকল্পনাকে বাধাপ্রাপ্ত করে।
তার পরই নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যার মধ্যে, 'ট্রেঞ্চলেস' কৌশলগুলি টানেলের ধসে পড়া বা আরও ক্ষতি হওয়া রুখছে। এই পদ্ধতিতে খনন ছাড়াই আটকে পড়া ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। এমএস পাইপ বসানোর জন্য দেরাদুন থেকে সেচ বিভাগের পাঁচজন বিশেষজ্ঞ প্রযুক্তিবিদের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
তিনটি পোক্লেইন মেশিন, দুটি জেসিবি, ছয়টি ট্রাক, একটি হাইড্রা এবং দুটি লোডার টানেলের বাইরে মোতায়েন রয়েছে। চারটি পোক্লেইন মেশিন, তিনটি শটক্রিট মেশিন, দুটি বুমার, দুটি হাইড্রা এবং দুটি ট্রাক টানেলের ভিতরে কাজ করছে। উত্তরাখণ্ড সরকার ধসের কারণগুলি জানতে এবং তদন্তের জন্য উত্তরাখণ্ড ল্যান্ডস্লাইড মিটিগেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের পরিচালকের অধীনে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞরা আছেন।