সুখবরের আশায় বুক বাঁধছে তামাম দেশবাসী। উত্তরকাশী সুড়ঙ্গের ভেতরে 'লোহার প্রাচীর' ভেঙে, ৪১ শ্রমিকের উদ্ধারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার অভিযান। উত্তরকাশী সিল্কয়ারা টানেলের ভিতর আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘টানেলের ভিতর পাইপলাইন ড্রিলিংয়ের সময় যে সমস্যাগুলি দেখা দিয়েছে তা সমাধান করা হয়েছে। এর আগে, কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে ১০ দিন আগে নির্মীয়মান টানেলের একটি অংশ ধসে আটকা পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য মার্কিন তৈরি অগার মেশিনটিকে ৫৭ মিটার ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে ড্রিল করতে হয়েছিল। মাত্র ১৩ মিটার ধ্বংসাবশেষ খনন করা বাকি রয়েছে।
আর মাত্র কয়েকটা মুহূর্ত। তার পরই অন্ধকার পেরিয়ে আলোর মুখ দেখবেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ১২ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক। ইতিমধ্যে তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছে অস্থায়ী হাসপাতাল। মোতায়েন করা হয়েছে ৪০টি অ্যাম্বুল্যান্স। এমনকী, রয়েছে এয়ার লিফটের ব্যবস্থাও। সবমিলিয়ে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে উদ্ধারকার্যের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন পরিবারের সদস্যরা। তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মন্দিরও।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় নির্মাণাধীন সিল্কিয়ারা টানেলে (উত্তরকাশী টানেল ধসে) আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক আজই অন্ধকার কাটিয়ে আলোর সন্ধান পেতে পারেন। গত ১২ দিন ধরে সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারে বিভিন্ন সংস্থার উদ্ধার অভিযান শেষ পর্যায়ে। এর ঘটনাস্থলে চিকিৎসকদের একটি টিমও হাজির রয়েছেন। বর্তমানে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক ও উদ্ধারকারী দলের মধ্যে বাধা সৃষ্টিকারী লোহার প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন ৪১ জন শ্রমিক যে কোনো সময় মৃত্যুর কবল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। উল্লেখ্য, গভীর সন্ধ্যার ঘটনায় অগার মেশিনের পথে কয়েকটি লোহার রড এসে ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে স্টিলের পাইপ ড্রিলিংয়ের কাজ ব্যাহত হয়। এখন আশা করা হচ্ছে আজ সকালের মধ্যে উদ্ধার অভিযান শেষ হবে।
পাইপ বসানোর কাজ সম্পুর্ণ হওয়ার পর শ্রমিকরা তা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবেন। এই পাইপটি এক মিটারের চেয়ে একটু কম চওড়া। পাইপটি অন্য প্রান্তে পৌঁছে গেলে, আটকে পড়া শ্রমিকরা পাইপের ভিতর দিয়ে বেরিয়ে আসবেন। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) একটি দলকে সন্ধ্যায় সুড়ঙ্গে ঢুকতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞসহ ১৫ জন চিকিৎসকের একটি দলকে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে।
পুরো প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে জানতে চাইলে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘লোহার রড কাটতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না তবে আরও দুটি পাইপ বিছিয়ে একসঙ্গে ঢালাই করতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, যেকোনো অবস্থাতেই বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শেষ হতে পারে। পাইপ বসানোর পর শ্রমিকরা তা দিয়ে বাইরে আসতে পারবেন। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) একটি দলকে সন্ধ্যায় সুড়ঙ্গে ঢুকতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞসহ ১৫ জন চিকিৎসকের একটি দলকে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে’।
ঘটনাস্থলে ১২টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি থাকছে এয়ার লিফটের ব্যবস্থাও। আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে জেলার সমস্ত হাসপাতালের পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (AIIMS), ঋষিকেশও সতর্ক করা হয়েছে।উত্তরকাশী জেলার চারধাম যাত্রা রুটে নির্মাণাধীন সিল্কিয়ারা টানেলের একটি অংশ ১২ নভেম্বর ধসে পড়েছিল, যার কারণে শ্রমিকরা ধ্বংসস্তূপের অপর পাশে আটকে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং সিল্কিয়ারায় চলমান উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে তথ্য নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারা এবং দণ্ডলগাঁওয়ের মাঝে তৈরি হচ্ছিল ওই সুড়ঙ্গটি।