জীবনের জন্য সংগ্রাম…! কেটে গিয়েছে ১৫ দিন। এখনও টানেলেই আটকে শ্রমিকরা। দুর্বিসহ যন্ত্রণায় কাটছে একটার পর একটা রাত। কবে মিলবে মুক্তি? সঠিক উত্তর জানা নেই। ক্ষীণ হচ্ছে মুক্তির আশা।
আমেরিকায় তৈরি অগার যন্ত্রটি শুক্রবার রাতে সুড়ঙ্গের লোহার কাঠামোয় আটকে ভেঙে গিয়েছিল। সেই যন্ত্র আর মেরামত করা সম্ভব নয়। ফলে অন্য রাস্তা খুঁজতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বাকি কয়েক মিটার হাত দিয়েই খুঁড়ে ফেলা হবে। শাবল-সহ অনান্য সরঞ্জাম নিয়ে সুড়ঙ্গে নামবেন শ্রমিকেরা।
রবিবার থেকেই চলবে সেই প্রস্তুতি। সুড়ঙ্গের উপর দিক থেকে খোঁড়ার কথাও ভাবা হয়েছে। তার জন্য হায়দরাবাদ থেকে অন্য একটি যন্ত্র আনা হয়েছে। বর্ডার রোডস অর্গানাইজ়েশন পাহাড়ের উপরের অংশ পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে যন্ত্রটিকে সুড়ঙ্গের মাথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে খোঁড়া শুরু হতে পারে।
এখন পর্যন্ত, উদ্ধারকর্মীরা ৪৬ মিটার (১৫১ ফুট) খনন করেছেন এবং পথ তৈরি করতে আরও ১২ মিটার (৪০ ফুট) খনন করতে হবে। ইতিমধ্যে, উত্তরাখণ্ড সরকার আটকে পড়া শ্রমিকদের ৬-ইঞ্চি (১৫ সেন্টিমিটার) পাইপের মাধ্যমে চাল এবং ডালের তৈরি গরম খাবার সরবরাহ করছে। এছাড়া আলাদা পাইপের মাধ্যমেও অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
আটকে পড়া শ্রমিকদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। ইতিমধ্যে অনেক শ্রমিক পরিবার দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন । ঘরের ছেলেকে একবার চোখের দেখা দেখার অপেক্ষায় বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানেই ক্যাম্প করে রয়েছেন ।
এদিকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, হেমন্ত সোরেন গত সপ্তাহে উত্তরাখণ্ডের নির্মাণাধীন সিল্কিয়ারা টানেল থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানে বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন যে উদ্ধারের পর শ্রমিকদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে ।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাংসদ বিনয় বিশ্বম পাহাড়ি এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন। তাতে বলা হয়েছে, "উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার সম্পর্কিত ঘটনাগুলি সমগ্র দেশকে উদ্বিগ্ন করেছে। নির্মাণাধীন সিল্কিয়ারা-বারকোট টানেলের ধস এবং এর ভিতরে আটকা পড়া ৪১ জন শ্রমিক। এই ঘটনা দেশকে নাড়া দিয়েছে। শ্রমিকদের আটকে থাকার পর দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে উদ্ধার অভিযান শেষ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে”।
সিল্কিয়ারা টানেলের অভ্যন্তরে অগার মেশিনের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হওয়ার পর, এখন টানেলের উপর থেকে উল্লম্ব খননের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। এ জন্য শনিবার পাহাড়ে ড্রিলিং মেশিন তোলা হয়েছে। যাইহোক, সূত্রের খবর, উদ্ধারকারী দল এখনও টানেলের ভিতরেই ম্যানুয়াল ড্রিলিং শুরু করার জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে। যাতে কমপক্ষে লাগতে পারে ৪৮ ঘন্টা টানেলের ভিতরে ম্যানুয়াল ড্রিলিং শুরু করে শ্রমিকদের বের করে আনার প্রস্তুতির কথা ভাবা হচ্ছে। এর জন্য উল্লম্ব ড্রিলিংয়ের বিশেষজ্ঞদের একটি দলও ডাকা হয়েছে।