ইউএনজিএ-তে পাকিস্তানের নিন্দা। আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহারের বিরাট অভিযোগ ভারতের সেই সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কড়া সমালোচনা। রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব ভারতের। মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করার পাশাপাশি অবিলম্বে ‘পিওকে’ খালি করার হুঙ্কার। পাকিস্তান রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে কাশ্মীর ইস্যু তুললে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতের তরফে বলা হয়েছে ‘বারবার বলা হয়েছে পাকিস্তান একটি সন্ত্রাসবাদী দেশ। পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়। মুম্বাই হামলার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান’।
পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার রাষ্ট্র সংঘের সাধারণ পরিষদে জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপনের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারত। শুক্রবার তিনি তার বক্তৃতায় বলেছিলেন যে জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যু রাষ্ট্রসংঘের এজেন্ডায় থাকা দীর্ঘতম ইস্যুগুলির মধ্যে একটি। তিনি কাশ্মীরকে দুই দেশের মধ্যে অশান্তির চাবিকাঠি হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। এবার পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের সচিব পেটাল গেহলট। পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার সময়, তিনি বলেন, ভারতের অবৈধভাবে দখল করা এলাকাগুলিকে খালি করতে হবে পাকিস্তানকে। একই সঙ্গে ২৬/১১ হামলার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারতের প্রথম সেক্রেটারি পেটাল গেহলট বলেছেন, "পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং বিদ্বেষপূর্ণ প্রচার ছড়াতে এই ফোরামের অপব্যবহার করার অভ্যাস ছাড়তে পারছে না। সদস্য রাষ্ট্র এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলি ভালভাবে জানে যে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে প্রশয় দেয়। আমরা আবারও বলতে চাই যে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জড়িত সমস্ত সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ। পাকিস্তানের কোন অধিকার নেই। ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে কথা বলার”।
পাকিস্তানের প্রতি কটাক্ষ করে প্যাটেল গেহলট বলেন, "বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দিকে আঙুল তোলার আগে, আগে নিজেদের আয়নার সামনে দেখুক পাকিস্তান। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের সবচেয়ে বড় উদাহরণ ২০২৩ সালের আগস্টে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বর্বরতা। ১৯টি গির্জা সহ খ্রিস্টানদের ৮৯টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।"
শুধু তাই নয়, পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের, বিশেষ করে হিন্দু, শিখ ও খ্রিস্টানদের অবস্থা খুবই খারাপ। সম্প্রতি, পাকিস্তানের নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে প্রতি বছর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আনুমানিক এক হাজারের বেশি মহিলাকে অপহরণ করা হয়েছে, জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে”।
ভারত আরও বলেছে, "পাকিস্তানের সঙ্গে প্রযুক্তিগত কৌশলে জড়িত হওয়ার পরিবর্তে, আমরা মুম্বই হামলার দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। ২৬/১১ -এর ভয়ঙ্কর হামলার পর ১৫ বছর পার হয়েছে। সেদিন হামলায় যারা আক্রান্ত হন আজও তাঁরা ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছেন।" ভারতের তরফে শান্তির জন্য পাকিস্তানকে বেশ কিছু দাওয়াই দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো বন্ধ করা এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করা এবং ভারতের অধিকৃত এলাকা খালি করা সেই সঙ্গে পাকিস্তানের উচিত তার দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা।