দেশের ১৫-১৮ বছর বয়সীদের প্রায় ৬০ শতাংশের কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নেওয়া হয়েছে। এরপরই এই বয়সীদের টিকাদানের গতি মন্থর হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে, ১৫-১৮ বছর বয়সীদের প্রত্যেকদিন গড়ে ৬.২৫ লক্ষকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। এই মাসের প্রথম সপ্তাহে এই বয়সীদের টিকাদান শুরু হয়। সেই সময় প্রতিদিন গড়ে ৪০ লক্ষের বেশি ১৫-১৮ বছর বয়সীকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত এই বয়সের ৪.৫ কোটির বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে। ভারতে ১৫-১৮ বছর বয়সীর সংখ্যা ৭.৫ থেকে ৭ কোটি বলে অনুমান।
প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাদানের প্রবণতার নিরিখে ১৫-১৮ বছর বয়সীদের টিকা দওয়ার ধীরগতি অপ্রত্যাশিত নয়। যেকোন নির্দিষ্টগোষ্ঠী বা বয়সসীমার লোকেদের অর্ধেক সংখ্যাক টিকা পেয়ে গেলেই তার গতি কমতে থাকে।
তবে, ১৫-১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে টিকার চাহিদা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি। ওমিক্রনের প্রকোপ, করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ এর কারণ হতে পারে। দেখা যাচ্ছে টিকা নেওয়া থাকলে তাঁর শরীরে সংক্রমণের প্রভাব মারাত্মক আকার ধারণ করছে না। যা অল্পবয়সীদের মধ্যে টিকা নিয়ে সচেতনতা বাড়িয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বয়সীদের টিকার চাহিদা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ মানুষ বুস্টার ডোজ গ্রহণ করছেন। এই পরিসংখ্যান তিন সপ্তাহ আগের তুলনায় খুব আলাদা নয়। সেই সময় বুস্টার ডোজকে ভারতে 'সতর্কতামূলক ডোজ' বলা হত। এই ডোজ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করা ফ্রন্টলাইন কর্মী এবং প্রবীণ নাগরিকদের দিয়ে শুরু হয়েছিল।
ভারতে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১০ কোটির বেশি লোক রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের টিকার ডবল ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এঁদের সকলে এখনই বুস্টার ডোজের জন্য যোগ্য নয়। দ্বিতীয় ডোজের পর ৯ মাস অতিক্রম হলেই বুস্টার ডোজ নেওয়া সম্ভব। এছাড়া যাঁদের কমর্বিডিটি আছে তাঁরা চিকিৎসকের অনুমতিক্রমে বুস্টার ডোজ পেতে সক্ষম।
শুক্রবার পর্যন্ত, ভারতে কোভিড টিকার ১৬৫ কোটিরও বেশি ডোজ দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যানের প্রায় ১৬ শতাংশ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্যোগে 'আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা' প্রজেক্ট অনুসারে, সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত ১০ বিলিয়ন টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টিকা সর্বত্র সমানভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে।
বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি কোভিড টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে। কিন্তু আফ্রিকা মহাদেশের ৫৪টি দেশে (যার সম্মিলিত জনসংখ্যা ভারতের সঙ্গে তুলনীয়) এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডোজ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি চার জনের মধ্যে ১ জন ডোজ পেয়েছেন। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে টিকাদানের হার ভয়াবহ।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের মতো কিছু দেশ তাদের নাগরিকদের চতুর্থ ডোজের বন্দোবস্ত করেছে। চীন প্রায় তিন বিলিয়ন ডোজ কোভিড ভ্যাকসিন দিয়েছে। প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডোজ ইউরোপে মানুষকে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৪০ মিলিয়ন টিকার ডোজ দিয়েছে।
Read in English