/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/01/Vaishno-Devi-stampede.jpg)
বৈষ্ণো দেবীতে পদপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ১২ জন পূণ্যার্থীর।
কৃষক পরিবারের প্রথম ডাক্তার সন্তান। তাঁকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের সিং পরিবারের গর্বের শেষ ছিল না। এলাকার ছেলে ডাক্তার বলে আশ্বস্ত ছিলেন পাড়া, প্রতিবেশীরাও। গোরক্ষপুরেই একটি হাসপাতাল চালানোয় তাঁর উপর আস্থা কয়েকগুণ বাড়ে। সেই ডাক্তার অরুণ প্রতাপ সিংয়ের একমাস আগেই বিয়ে হয়েছিল। পাত্রীও চিকিৎসক। নবদম্পতি স্থির করেছিলেন মাতা বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরে গিয়ে আর্শীবাদ নিয়েই জীবনের বাকিদিনগুলিতে পথ চলবেন। পৌঁছেও ছিলেন ঈশ্বর দর্শণে। কিন্তু, সেখানেই অরুণের জীবনে যবনিকা পতন। বছরের শুরুতেই বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে যে ১২ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম বছর তিরিশের ডাক্তার অরুণ প্রতাপ সিং।
শোক বিহ্বল সিং পরিবার। অরুণের বাবা পেশায় কৃষক সত্যপ্রকাশ সিং ভেজা চোখে বলছিলেন, প্রথমে সাংবাদ মাধ্যমে অরুণের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি। খতিয়ে দেখতে খবর দেন মেয়েকে। অবশ্য, তার আগেই সরকারি আধিকারিকদের তরফে দুঃসংবাদ পৌঁছায় বর্ষীয়ান প্রতাপের কাছে।
যাঁকে নিয়ে বেঁছে থাকার স্বপ্ন দেখা, সেই ছেলেকে হারিয়ে আজ দিশাহার সত্যপ্রকাশ। ছেলের নানা স্মৃতি এখন ভিড় করছে, চোখ আবছা হচ্ছে বৃদ্ধের। আর ছেলের কথা বলতে বলতে চোখ বেয়ে পড়ছে জল।
বুলন্দশহরের খুরজা থেকে আয়ুর্বেদিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন অরুণ প্রতাপ সিং। গোরক্ষপুরেই খুলেছিলেন হাসপাতাল। অরুণের সঙ্গে ওই হাসপাতালের অংশীদার ডাক্তার অজয় কুমার। অরুণ, অজয় ও তাঁদের আরেক বন্ধু চিকিৎসক অরুরাগ নারায়ণ সিং এবং তাঁদের স্ত্রীরা একসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে য়াওয়ার পরিকল্পনা করেন।
২৯ ডিসেম্বর অরুণরা গোরক্ষপুর থেকে রওনা হন বৈষ্ণো দেবীর উদ্দেশ্যে। অরুণের বাবা প্রতাপ সিংয়ের কথায়, 'ভাড়া গাড়ি করে ওরা বৈষ্ণো দেবী যাচ্ছিল। আমার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে ওরা তখন জলন্ধরে। অরুণ নিজের মায়ের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জানতে চায়। ততক্ষণ তো সবই ঠিক ছিল। এরপর শনিবার সকালে টিভি খুলতেই দেখি দুর্ঘটনার খবর। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অরুণের নাম দেখানো শুরু হয়। তখন ছেলের মোবাইলে ফোন করলে বেজেযায়। আমি তখন মেয়েকে খবর নিতে বলি। পরে সরকারি কর্মীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জানান। বিকেলে লখনৌতে আমার ভাই, আত্মীয়রা গিয়ে অরুণের দেহ হাতে পায়।'
শোকে কাতর প্রতিবেশীরাও। এক প্রতিবেশী বলছিলেন, 'ওঁর হিন্দ হাসপাতালে দুস্থদের কম অর্থ এমকী বিনামূল্যেও দেখে দিতো। ও তো পরিবারের অন্যদের, এমনকী প্রতিবেশীদেরও অনুপ্রেরণা ছিল।'
Read in English