জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার সুরনকোট মহকুমার দেরা কি গালির কাছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জঙ্গিরা একটি সেনা গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। হামলার পর সেনাবাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়ে বলেছে, 'সূত্রের পাওয়া খবরের ভিত্তিতে গত রাতে জেনারেল এরিয়া ডিকেজিতে একটি যৌথ অভিযান শুরু হয়। সেই অভিযানে যোগ দিতে আরও জওয়ানদের পাঠানো হচ্ছিল। আজ সন্ধ্যায় যাওয়ার পথে জঙ্গিরা সেনার গাড়িতে হামলা চালায়। এনকাউন্টার হয়েছে।' এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে সেনাবাহিনী অন্য একটি সূত্রে খবর, সেনার একটি জিপসি এবং জওয়ান বোঝাই একটি মিনি ট্রাক সুরানকোটের বুফলিয়াজ থেকে রাজৌরির থানামান্ডির দিকে যাচ্ছিল। সেখানে ৪৮ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সদর দফতর। পথেই হামলা চালায় জঙ্গিরা।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িগুলো তোপা পিরের নীচে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই, জঙ্গিরা অতর্কিতে হামলা শুরু করে। জঙ্গিরা রাজৌরির জেলা ও দায়রা বিচারক ভিকে ফুলকে ও তাঁর বন্ধু এবং সঙ্গে থাকা দুই পুলিশকর্মীকে দুই দশকেরও বেশি আগে ওই জায়গাতেই হত্যা করেছিল। দেরা কি গালি এবং বুফলিয়াজ এলাকার মধ্যে এই তোপা পির অঞ্চল। যা রাজৌরি এবং পুঞ্চ জেলার সীমানায় অবস্থিত। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ জায়গাই ঘন বন। তারমধ্যে একটি হল চামরের বন। অপরটি ভাটা ধুরিয়ার বন।
আরও পড়ুন- কুস্তির আখড়াকে অকাল বিদায় সাক্ষীর, বেনজির ঘটনায় উত্তাল ভারত
রাজৌরি এবং পুঞ্চ হল যমজ সীমান্ত জেলা, যেগুলোকে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ২০১১ সালে 'জঙ্গিমুক্ত' বলে ঘোষণা করেছিল। গোয়েন্দাদের পাওয়া খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি সেখানে আবার জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়তে শুরু করেছে। পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো এই দুটি জেলায় জঙ্গি সংগঠন পুনরুজ্জীবিত করার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। পালটা চেষ্টা চালাচ্ছে বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশ শুধুমাত্র চলতি মাসেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এবং উপত্যকার অভ্যন্তরে জঙ্গিদের সঙ্গে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সেই সব সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৭ জঙ্গি মারা গেছে। জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টারে ১৪ জনের মত সেনা জওয়ানও শহিদ হয়েছেন। নর্দার্ন আর্মি কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সম্প্রতি বলেছেন যে রাজৌরি এবং পুঞ্চে অন্তত ২০-২৫টি জঙ্গি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। হামলার পর আরও জওয়ানদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ৪৮ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ওই এলাকায় বড় অভিযান শুরু করেছে।