দেশ জুড়ে আতশ বাজির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি এ কে সিক্রি ও বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, সোমবারের তালিকাতে বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও, রায় ঘোষণা হবে ২৩ অক্টোবর। এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে আদৌ কি এবছর বিক্রি করা সম্ভব হবে আতশবাজি? এতদিন শব্দবাজির তীব্রতা মেপে দিলেও তা যে খুব একটা মান্যতা পেয়েছে এমনটা নয়। তবে এবারের ছবিটা আলাদা। সুপ্রিম কোর্ট বাজি বিক্রির ওপর সম্পূর্ণ লাগাম টানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২8 আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট দুর্ঘটনা এড়াতে ও বায়ু দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আবেদনকারী, বাজি প্রস্তুতকারক, কেন্দ্র এবং কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের বক্তব্য শুনে শীর্ষ আদালত নির্দেশ মুলতুবি রেখেছিল।
বেঞ্চ ইতিপূর্বে জানিয়েছিল, যে স্বাস্থ্য এবং ব্যবসা উভয়ের মধ্যেই ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজন আছে। বলা হয়েছিল যে বাজি প্রস্তুতকারকদের জীবনধারণের পাশাপাশি দেশের ১৩০ কোটি নাগরিকের স্বাস্থ্যের মৌলিক অধিকারের কথাও চিন্তা করতে হবে। পাল্টা জবাবে বাজি প্রস্তুতকারকরা সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিলেন যে দীপবালির বাজিই দূষণের একমাত্র কারণ নয়। সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করলে এই শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। বহুমানুষের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : Amritsar Train Accident: সমস্ত অনুমতি নেওয়া হয়েছিল, দাবি দশেরা উৎসবের সংগঠকের
বাজি নির্মাতারা দাবি করেছেন, শুধুমাত্র ধোঁয়া উৎপন্নকারী কোনো আতশবাজি পোড়ানোর কারণেই দূষণের মাত্রা বিপদসীমা পার করেনি। বরং যানবাহন দূষণ, নির্মাণকার্যের ধুলো থেকেও দূষণ ঘটে থাকে। উল্টোদিকে বছরে কেবল এই একটা সময়েই বাজি পোড়ানো হয়।
পাঁচটি বাজি প্রস্তুতকারক কারখানার কর্মকর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন, "বাজির ধোঁয়া যদি বায়ু দূষণের একমাত্র কারণ হয়ে থাকে তাহলে দেশের অন্যান্য শিল্প যেখান থেকে গলগলে ধোঁয়া নির্গত হয়, তাহলে কি সেই সব কলকারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হবে?"
আরও পড়ুন: Amritsar train accident: এত চিতা আগে দেখেনি এ শ্মশান
শুনানি চলাকালীন আদালতে বায়ু দূষণের কারণে শিশুদের সমস্যা দেখা দেয় কিনা তা নিয়েও আলোচনা করা হবে। বাজির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে কিনা তা নির্ধারিত হবে মঙ্গলবার।
বেঞ্চের তরফ থেকে বলা হয়, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আতশবাজি থেকে উৎপন্ন ধোঁয়ার কারণে। শিশুদের কথা ভেবে এক আবেদনে আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ জানান শহরাঞ্চলে বাজি পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন,কারণ ইতিমধ্যে এলাকায় বায়ু দূষণ বিপজ্জনক স্তর অতিক্রম করেছে। ২০১৭ সালে, দীপাবলি চলাকালীন এনসিআর-দিল্লিতে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করে সুপ্রিম কোর্ট।