ND Tiwari dies: উত্তর প্রদেশ ও পরবর্তীকালে উত্তরাঞ্চলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ দত্ত তিওয়ারির আজ দিল্লিতে জীবনাবসান হয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। গত ২০ সেপ্টেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
১৯৬৩ সালে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া এই বর্ষীয়ান নেতা এমন একমাত্র রাজনীতিক যিনি দুটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। বীর বাহাদুর সিংকে সরিয়ে তিনি প্রথমবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন ১৯৭৬ সালে, মূলত ইন্দিরা এবং সঞ্জয় গান্ধীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার সৌজন্যে।
তিওয়ারি দ্বিতীয়বার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন ১৯৮৪ সালে, ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার অব্যবহিত পরেই। সেবছর তাঁর নেতৃত্বে রাজ্য নির্বাচনে বিপুল জয় পায় কংগ্রেস, কিন্তু তার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে সরিয়ে দেন রাজীব গান্ধী।
আরও পড়ুন: রাম মন্দির গড়তে আইন প্রণয়ন করুক সরকার: মোহন ভাগবত
তৃতীয়বার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিওয়ারি ক্ষমতায় আসেন ১৯৮৮ সালে, কিন্তু তার পরের বছর কংগ্রেসের ঐতিহাসিক পরাজয় ঘটে সেরাজ্যে, এবং গত ২৮ বছর ধরে সেই হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছে কংগ্রেস। তিওয়ারি অবশ্য কোনোবারই দীর্ঘস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, খুব বেশি হলে এক বছর।
কংগ্রেস জমানায় তিওয়ারি সংসদের দুই ভবনেই নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে তিনি সপ্তম লোক সভার সদস্য নির্বাচিত হন, এবং তাঁর কার্যকালে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব সামলান। ১৯৮৫ সালে তিনি রাজ্য সভায় মনোনীত হন, এবং ১৯৮৬-৮৭ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়ভার বহন করেন।
২০০২ সালে তিনি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। আজ পর্যন্ত তিনিই সেরাজ্যের একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পাঁচ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন।
অন্ধ্র প্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবেও ২০০৭-০৯ অধিষ্ঠিত ছিলেন এই নেতা, কিন্তু রাজ ভবনে তিনজন মহিলার সঙ্গে আপত্তিজনক অবস্থায় তাঁর একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান।
এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে রোহিত শেখর নামের এক উকিল পিতৃত্ব নিয়ে মামলা করেন এই মর্মে, যে তিওয়ারি তাঁর জন্মদাতা। দিল্লি হাই কোর্টে দায়ের করা ওই মামলায় শেখর দাবি করেন, তিনি তিওয়ারি এবং উজ্জ্বলা নামক মহিলার অবৈধ সম্পর্কের পরিণতি। অভিযোগ অস্বীকার করে তিওয়ারি প্রথমে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে অস্বীকার করেন, কিন্তু হাই কোর্টের নির্দেশে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা করান, যার ফলে নিশ্চিত হয় যে শেখরের দাবি সঠিক।
এবছরের জানুয়ারি মাসে উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই তিওয়ারি এবং শেখর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন।