বোমা ফাটালেন বিজয় মালিয়া। তাঁর দাবি, দেশ ছাড়ার আগে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, তাঁর বকেয়া টাকা পয়সা মিটিয়ে দিতে চান। সংবাদসংস্থা এএনআই এ খবর দিয়েছে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে মালিয় বলেন, "আমি চলে আসার আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ব্যাঙ্ক আমার সেটলমেন্টের চিঠি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।" ওয়েস্টমিনস্টার আদালতেই শুনানি চলছে এই লিকার ব্যারনের ভারতে প্রত্যর্পণ মামলার। ৯,০০০ কোটি টাকার জালিয়াতি ও তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত বিজয় মালিয়া। তিনি জানিয়েছেন, কর্নাটক হাইকোর্টের কাছেও বিষয়টির সর্বাঙ্গীন বোঝাপড়ার কথা বলেছিলেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মালিয়ার কথোপকথনের প্রাসঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে দেওয়া হল-
প্রশ্ন- কোনও সংসদ সদস্য আপনাকে আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের খবর দিয়েছিল? এরকম একটা অভিযোগ রয়েছে যে আপনার কাছে খবর ছিল, আপনাকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর -আমি দেশ ছেড়েছিলাম কারণ আমার জেনিভায় একটা মিটিং ছিল... দেশ ছাড়ার আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমি দেখা করেছিলাম। ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গে বোঝাপড়ার ব্যাপারটা আমি ওঁকে ফের বলেছিলাম। সত্যি হল এটাই।
প্রশ্ন- আপনি টাকা দিতে চাইছেন, কিন্তু সেটা কেউ নিতে চাইছে না, এরকম কেন হবে? আপনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন, এবং ভারতের সংসদে আপনি উঁচু পদে ছিলেন... আপনার টাকা মেটানোর প্রস্তাব কেউ গ্রহণ করবে না কেন?
উত্তর- আমার সেটলমেন্টের আবেদনে ব্যাঙ্কগুলো কেন আপত্তি তুলেছিল সে নিয়ে আপনারা খোঁজ নিতে পারেন। তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে তারা কেন আমার বকেয়া টাকা মেটানোর চেষ্টাকে সাপোর্ট করল না।
প্রশ্ন- অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছিল, সে নিয়ে যদি একটু বিস্তারিত বলেন...
উত্তর- আপনাদের বলতে যাব কেন?
৬২ বছর বয়সী প্রাক্তন কিংফিশার এয়ারলাইন্সের কর্তা এখন প্রত্যর্পণ মামলায় জামিনে রয়েছেন। ভারতের জেলব্যবস্থা নিয়ে যে ভিডিও পাঠানো হয়েছে, ওয়েস্টমিনস্টার আদালত সেটি খতিয়ে দেখবে।
বিজয় মালিয়ার বক্তব্য পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। অরুণ জেটলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের পর থেকে বিজয় মালিয়াকে তিনি কোনও সাক্ষাৎকারের সময় দেননি। বিবৃতিতে জেটলি বলেছেন, "তবে যেহেতু উনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন এবং মাঝে মাঝে অধিবেশনে আসতেন, একবার সেই সুযোগের অসদ্ব্যবহার করেছিলেন। আমি অধিবেশন থেকে বেরিয়ে আমার ঘরে যাওয়ার সময়ে উনি নিজের হাঁটার গতি বাড়িয়ে আমাকে ধরে ফেলেন, এবং বলেন, 'আমি সেটলমেন্টের একটা প্রস্তাব দিয়েছি।' আমি আগে থেকেই ওঁর ভুয়ো অফারের বিষয়ে জানতাম, ফলে আমি ওঁকে কথা বাড়ানোর সুযোগ দিইনি। আমি স্পষ্ট বলেছিলাম, আমার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলে লাভ নেই, অফার থাকলে সে নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যেন উনি কথা বলেন। উনি আমার দিকে যে সব কাগজ বাড়িয়ে ধরেছিলেন, সেসব আমি হাতে নিয়ে দেখিনি। ওই একবার একটি বাক্য বিনিময় ছাড়া ওঁর সঙ্গে আমার কখনও যোগাযোগ হয়নি।"