Advertisment

বিজয় মালিয়াকে আটকানোর দরকার নেই, লিখিত ভাবে জানিয়েছিল সিবিআই

নতুন লুক আউট নোটিসের সঙ্গে পাঠানো সে চিঠিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে,  ‘‘এই পর্যায়ে আটক করা আমাদের কাছে জরুরি নয়। যদি পরবর্তী কালে আটক করা প্রয়োজন হয় তাহলে পৃথক ভাবে তা জানানো হবে।’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
vijay mallya

লিকার ব্যারন বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণ আসন্ন?

বিজয় মালিয়ার লুক আউট সার্কুলার (এলওসি)-এ, প্রথমে তাঁকে আটকানোর কথা থাকলেও পরে তা বদলে যায়। বলা হয় প্রবেশ বা প্রস্থান সম্পর্কিত তথ্য জানাতে হবে। এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে, একটি সংবাদ সংস্থার দেওয়া খবর অনুযায়ী গত সপ্তাহে সিবিআই ব্যাখ্যা দিয়েছিল, এল ও সি-তে এই গুরুত্ব হ্রাস ছিল সিদ্ধান্তের ভুল (এরর অফ জাজমেন্ট)।

Advertisment

কিন্তু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের হাতে এসে পৌঁছোনো গোপন কিছু চিঠিতে দেখা যাচ্ছে সিবিআই মুম্বই পুলিশকে জানিয়েছে তাদের প্রথম লুক আউট নোটিসটিই ভুল ছিল।

সেখানে অন রেকর্ড বলা হয়েছে, মালিয়াকে আটকানো ‘‘অপ্রয়োজনীয়’’।

১৬ অক্টোবর, ২০১৫-য় সিবিআই তাদের প্রথম লুক আউট নোটিসে মালিয়ার দেশ ছাড়া আটকানোর কথা উল্লেখ করেছিল।

আরও পড়ুন, বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণে দেশ যেন বিলেতের উপনিবেশ

মালিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় লক আউট নোটিস জারি হয় ২০১৫-র ২৪ নভেম্বর। ঠিক সে রাতেই মালিয়া দিল্লি এসে পৌঁছন। সেই লুক আউট নোটিসের সঙ্গে মুম্বই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের উদ্দেশে একটি চিঠিও লেখা হয়। দ্বিতীয় লুক আউট নোটিসে মালিয়ার প্রবেশ বা প্রস্থান সম্পর্কিত তথ্য অবগত করতে বলা হয়েছিল।

চার মাস পর, ২০১৬ সালের ২ মার্চ মালিয়া দেশ ছাড়েন। এখন তাঁর প্রত্যর্পণ নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে টানাটানি চলছে ভারতের। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে আইনি পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে তারা যেন মালিয়ার দেশ ছাড়া আটকাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক অবশ্য তাতে কর্ণপাত করেনি।

এই বিতর্কিত বিষয়টির মূল জায়গাটি হল একটি সতর্কবার্তা। অভিবাসন দফতরের পক্ষ থেকে ২৩ নভেম্বর ২০১৫ সালে সিবিআই কে জানানো হয়, ২৪ নভেম্বর রাতে বিদেশ থেকে দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছচ্ছেন বিজয় মালিয়া।

সে রাতেই, অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে, মুম্বই পুলিশকে এক দীর্ঘ চিঠি পাঠায় সিবিআই। যে নির্দেশাবলী পৌঁছে যাবে অভিবাসন দফতরের কাছে।  নতুন লুক আউট নোটিসের সঙ্গে পাঠানো সে চিঠিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে,  ‘‘এই পর্যায়ে আটক করা আমাদের কাছে জরুরি নয়। যদি পরবর্তী কালে আটক করা প্রয়োজন হয় তাহলে পৃথক ভাবে তা জানানো হবে। এ ব্যাপারে যে লুক আউট নোটিস দেওয়া হল, প্রয়োজনবোধে তা পরিবর্তন করা যেতে পারে।’’

আরও পড়ুন, আলো, হাওয়া, বিনোদন, দেশের জেলখানায় বিজয় মালিয়ার জন্য রয়েছে সব ব্যবস্থাই, ধরা পড়ল সিবিআই-এর ভিডিওতে

এ চিঠি দেখে মনে হবে, এতদিন যেন সিবিআই এ ব্যাপারে যে সতর্ক করার পদ্ধতি (এপিআইএস বা অ্যাডভানস্ড প্যাসেঞ্জার ইনফর্মেশন সিস্টেম) চালু ছিল, সে সম্পর্কে অবগতই ছিল না। এখন সে ব্যাপারে জানার পরে তাদের কাছে বিজয় মালিয়াকে আটক করার আর কোনও প্রয়োজন নেই।

এ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন সিবিআই-এর মুম্বই এস পি হর্ষিতা আট্টালুরি এবং এ চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে মুম্বইয়ের আইপিএস অফিসার আশাবতী দোর্জেকে।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘লুক আউট নোটিসে আমরা অনুরোধ করেছি এই ব্যক্তির ভারত ছাড়া বা ভারতে আসার বিষয়টি অবগত করতে, এবং এলওসি-র সঙ্গে দেওয়া যে অ্যানেক্সারে যে ওই ব্যক্তিকে আটকানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কারণ হল, তার দেশে পৌঁছোনোর ব্যাপারে আগাম তথ্য অভিবাসন কর্তৃপ্ক্ষের কাছে নাও থাকতে পারে এই ভাবনা থেকে, যাতে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রবেশ বা প্রস্থানের জন্য ইমিগ্রেশন পয়েন্টে পৌঁছোনো মাত্র সে তথ্য আমাদের কাছে জানানো হয়। সে কারণেই আমরা ওই ব্যক্তিকে আটকানোর কথা উল্লেখ করেছিলাম।’’

পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে লুক আউট নোটিসে এই অভূতপূর্ব বদলের সপক্ষে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা যদি জানতাম যে আপনাদের ডেটাবেস ও রেকর্ডে এপিআইএস-এর সুবিধা রয়েছে, তাহলে আমরা ভিন্নভাবে বিষয়টি লিখতাম। আমরা আপনাদের কাছে ওই ব্যক্তির আসা-যাওয়া সম্পর্কিত তথ্য গোপনে আমাদেরকে জানাতে অনুরোধ করছি। এই পর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে আটকানো আপাদের পক্ষে প্রয়োজনীয় নয়...’’

সিবিআইয়ের আধিকারিক আট্টালুরি এবং তাঁর ঠিক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক জয়েন্ট ডিরেক্টর এ কে শর্মাকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে এ নিয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁরা ফোন বা মেসেজের উত্তর দেননি।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর সংবাদসংস্থা পিটিআই সিবিআইকে উদ্ধৃত করে জানায় যে লুক আউট নোটিসের গুরুত্ব হ্রাস তাদের দিক থেকে সিদ্ধান্তের ভুল। দু দিন পর সিবিআই একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘‘বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিসে বদল আনা হয়েছিল কারণ তাঁকে আটক বা গ্রেফতার করার মত যথেষ্ট কারণ সিবিআই-এর কাছে ছিল না।

cbi Vijay Mallya
Advertisment