Advertisment

পালানোর চারদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে মালিয়াকে আটকানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ককে

‘‘ঠিক হয়েছিল সোমবার সকালে তাঁরা আবার দেখা করবেন এবং সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে যাতে মালিয়া দেশ ছেড়ে না পালাতে পারেন। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা কেউ আসেননি।’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজয় মালিয়া (ফাইল ফোটো)

বিজয় মালিয়া দেশ ছাড়ার চার দিন আগে স্টেট ব্যাঙ্কের আইনজীবী পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁর বিদেশ যাওয়া আটকানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে। স্টেট ব্যাঙ্ক সে পরামর্শ কানে তোলেনি। প্রসঙ্গত, কিংফিশার এয়ারসাইন্সের মালিকের সবচেয়ে বড় উত্তমর্ণ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াই।

Advertisment

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে জানিয়েছেন তিনি এসবিআই কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন। িনি আঁচ পয়েছিলেন বিজয় মালিয়া দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। দুষ্যন্ত দাভে এও জানিয়েছেন যে,  ২০১৬-র ২৮ ফেব্রুয়ারি, রবিবার, তিনি এ নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন স্টেট ব্যাঙ্ক ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দুষ্যন্ত দাভে জানিয়েছেন, রবিবারের ওই বৈঠকে তিনি পরের দিন সোমবারই বিজয় মালিয়ার দেশ ছাড়া আটকানোর আদেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে। দাভে জানিয়েছন, ‘‘এসবিআই চেয়ারপার্সন এবং সরকারের উঁচুতলার লোকজন, সবাইই এই বৈঠক এবং আমার পরামর্শের কথা জানতেন। তবে কোনওরকম ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি।’’

আরও পড়ুন, দেশ ছাড়ার আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম: বিজয় মালিয়া

দাভের মন্তব্য নিয়ে তৎকালীন এসবিআই চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘‘দাভের যা বলার উনি বলেছেন। আমি এখন আর এসবিআই-এর সঙ্গে নেই। আপনারা এ ব্যাপারে বর্তমান এস বিআই ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’’

দাভে জানিয়েছেন, এসবিআইয়ের আইনি পরামর্শদাতারা বৈঠকে এসেছিলেন ব্যাঙ্কের চারজন উচ্চপদস্থ কর্তাকে সঙ্গে নিয়ে। ‘‘ঠিক হয়েছিল সোমবার সকালে তাঁরা আবার দেখা করবেন এবং সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে যাতে মালিয়া দেশ ছেড়ে না পালাতে পারেন। এটা খুবই নির্দিষ্ট একটা পরামর্শ ছিল। আমরা পরদিন সকাল দশটায় (সুপ্রিম কোর্ট সকাল সাড়ে দশটায় খোলে) একসঙ্গে দেখা করব বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা কেউ আসেননি।’’

বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফ থেকে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তরে ব্যাঙ্কের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘কিংফিশার এয়ারলাইনস সহ কোনও ঋণখেলাপির ঘটনাতেই ব্যাঙ্ক বা তার আধিকারকদের পক্ষ থেকে কোনওরকম গাফিলতির অভিযোগ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অস্বীকার করছে। বকেয়া অর্থ উদ্ধার করার জন্য সক্রিয় ও কঠোর পদক্ষেপ ব্যাঙ্কের তরফ থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে।

মালিয়ার দেশ ছেড়ে পালানো আটকাতে ব্যর্থ হলেও এস বি আই-এর নেতৃত্বাধীন ১৭টি ব্যাঙ্কের কনসোর্টিয়াম শেষ অবধি ৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল।

আরও পড়ুন, বিস্ফোরক মালিয়া, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি রাহুলের

অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের কাছে ৮ মার্চ কনসোর্টিয়ামের পক্ষ থেকে আবেদনে বলেন, মোট ১৭টি ব্যাঙ্কের কাছে ৯০০০ কোটি টাকারও বেশি টাকার ঋণভার রয়েছে বিজয় মালিয়ার। মালিয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখোলাপি’ বলেও উল্লেখ করা হয়।

মালিয়ার সঙ্গে জেটলির বৈঠক এবং সেটলমেন্ট নিয়ে মালিয়া কী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার বিশদ বিবরণ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রত্যর্পণ মামলায় মালিয়ার আইনজীবী ক্লেয়ার মন্টেগোমারির কাছে। লন্ডন থেকে মন্টেগোমারি জানিয়েছেন, ‘‘অন রেকর্ডই হোক বা অফ রেকর্ডই হোক, পেশাদারি বিধি অনুসারে এই মামলার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে আমি অপারগ। আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আপনাদের জিজ্ঞাসার কোনও উত্তর আমি দিতে পারব না।’’

supreme court Vijay Mallya
Advertisment