বিকাশ দুবে এনকাউন্টার মামলায় উত্তর প্রদেশ পুলিশকে 'ক্লিনচিট' তদন্ত কমিশনের
রিপোর্টে বারবার বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যে এই কমিশন গঠন হয়েছিল তা, জনগণ এবং সংবাদমাধ্যমের অংশগ্রহণের অভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকী এগিয়ে আসেননি বিকাশের স্ত্রীও।
প্রমাণের অভাবে কুখ্যাত সমাজ বিরোধী বিকাশ দুবে এনকাউন্টার তদন্তে উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে ক্লিনচিট দিল তদন্তকারী কমিশন। ৬০ টি মামলায় অভিযুক্ত বিকাশ দুবেকে গ্রেফতারের পর উত্তরপ্রদেশ নিয়ে আসার সময় ‘পালাতে গেলে’ পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় বিকাশ এবং তার পাঁচ সাগরেদের। গোটাটাই ভুয়ো এনকাউন্টার বলে অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কমিশন গঠন করে শুরু হয় তদন্ত। শেষ পর্যন্ত কমিশনের তদন্তকারীরা বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে পুলিশকে নির্দোষ বলে জানিয়ে দিলেন।
Advertisment
পুলিশের খাতায় বিকাশের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, ছিনতাই সহ ৬০টি মামলা ছিল। তাকে ধরতে গত বছর জুলাইয়ে পাকড়াও করতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান উত্তরপ্রদেশের ৮ পুলিশ কর্মী। তারপর গা ঢাকা দেয় বিকাশ। সেই সময় বিকাশের একের পর এক সাগরেদকে এনকাউন্টারে খতম করে যোগীর পুলিশ। শেষপর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির থেকে বিকাশকে গ্রেফতার করা হয়।
উজ্জয়িনী থেকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে কানপুর নিয়ে আসার আগে মাঝপথে পুলিশের গাড়ি উল্টে যায় বলে দাবি করা হয়। সেই সুযোগেই নাকি পালানোর চেষ্টা করে বিকাশ। পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ কর্মীদের দিকেই নাকি গুলি চালাতে শুরু করে এই গ্যাংস্টার। পাল্টা পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দাবি করা হয়, মোট ৬টি গুলি লেগেছিল বিকাশের।
কিন্তু, এই এনকাউন্টার নিয়েই চরম বিতর্ক তৈরি হয়। বিরোধীদের দাবি, অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম চাপতে ভুয়ো সংঘর্ষে বিকাশকে হত্যা করা হয়েছে। তারই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে পিটিশন। সুপ্রিম কোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিএস চৌহানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে। সেই তদন্ত কমিশনের রিপোর্টই জমা পড়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশের দাবিকে খণ্ডন করার মতো কোনও ‘অকাট্য প্রমাণ’ মেলেনি।
উল্টোদিকে পুলিশের তত্ত্বের সমর্থনে পর্যাপ্ত প্রমাণ পেশ হয়েছে। এই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্ট এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে জমা করা হয়েছে। সেখানে তদন্ত কমিশনের তরফে আরও বলা হয়েছে, তারা তথ্য প্রমাণ জোগাড়ের জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। সংবাদমাধ্যম উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে প্রচুর খবর করেছে কিন্তু কেউ কোনও তথ্য প্রমাণ দেয়নি কমিশনকে। রিপোর্টে বারবার বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যে এই কমিশন গঠন হয়েছিল তা, জনগণ এবং সংবাদমাধ্যমের অংশগ্রহণের অভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকী এগিয়ে আসেননি বিকাশের স্ত্রীও।