গ্যাংস্টার, পুলিশ ও রাজনীতি। ৩রা জুলাই বিকাশ দুবেকে ধরতে পুলিশি অভিযানের পর থেকে এই তিনের যোগসাজশ ঘিরেই নানা প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু, শুক্রবার এনকাউন্টারে কুখ্যাত গ্যাংস্টারের মৃত্যুর পর এ সংক্রান্ত একাধিক জটিল প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গেল।
সোশাল মিডিয়া প্রচারিত এক ভিডিও ফুটেজে বিকাশকে দু'জন বিজেপি বিধায়কের নাম চেঁচিয়ে বলতে শোনা যাচ্ছে। বিকাশ ওই ভিডিওতে জানিয়েছিল, শাসক দলের দুই বিধায়ক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্টযোগ রয়েছে। এক শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কানপুরের গ্যাংস্টারের ছবি ভাইরাল হয়েছে। এখানেই সেই তালিকা শেষ নয়। সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিকাশের অতি ঘনিষ্ট কানপুরের স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কানপুরের এসএসপি অনন্ত দেও তিওয়ারি। এই ব্যবসায়ী এক সময়ে চায়ের দোকান কিনেছিলেন। বর্তমানে জেলবন্দি।
গত ৩রা জুলাই বিকাশের গ্রাম ডিক্রিতে অভিযান চালায় পুলিশ। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে প্রাণ যায় ৮ পুলিশকর্মীর। পরে গ্যাংস্টারের এক শাগরেদকে গ্রেফতার করতেই জানা যায় যে, পুলিশের অভ্যন্তরেই কেউ বিকাশকে অভিযানের খবর দিয়েছিল। ওই অভিয়ানের আগে বিকাশ দুবে সম্পর্কে এসএসপি অনন্ত দেও তিওয়ারিকে-কে চিঠি দিয়ে সাবধান করেছিলেন ঘটনার দিন নিহত ডিএসপি দেবেন্দ্র মিশ্র। চিঠিতে ডেপুটি পুলিশ সুপার লিখেছিলেন, 'যে কোনও দিন বড় কোনও ঘটনা ঘটতে পারে।' নিজে সংলগ্ন বিভিন্ন থানা থেকে অন্তত ৫০ জন অফিসার নিয়ে বিকাশকে ধরতে টিম বানিয়েছিলেন। কিন্তু অনন্ত দেও তিওয়ারি ওই চিঠিকে পাত্তা দেননি বলে অভিযোগ। সেই চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তি বেড়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের। তবে, এই চিঠির উল্লেখ অফিসিয়াল রেকর্ডে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ৭ই জুলাই তিওয়ারিকে মোরাদাবাদে প্রভিশনাল আর্মড কনস্টাব্যুলারি-তে বদলি করা হয়।
বিকাশের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড ও গ্রেফতার করা হয়েছে চৌবেপুর থানার স্টেশন অফিসার বিনয় তিওয়ারি ও সাব ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ কুমার শর্মাকে। এ সপ্তাহের শুরুতেই চৌবেপুর থানার ৬৮ পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়।
চৌবেপুর ছাড়াও বিকাশ দুবের সঙ্গে শিবরাজপুর, বিলহার,শিবলি থানার একাধিক পুলিস কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে।
২০০১ সালে বিজেপি নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সন্তোষ শুক্লাকে শিবলি পুলিশ স্টেশনের মদ্যেই গুলি করে খুন করেছিলেন বিকাশ দুবেষ। সেই বন্কুকের লাইসেন্স এখনও পর্যন্ত বাতিল করা হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা দুবের পক্ষে বয়ান দেওয়ায় ঘটনার চার বছর পর দুবেকে সন্তোষ শুক্লা খুনের অভিযোগ থেকে মুক্ত করা হয়।
এতকিছুর পরও ৬২ মামলার আসামী দুবের বিরুদ্ধে অদৃশ্য কারণে একাধিক মামলা দায়ের হয়নি বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত ২৫ অপরাধীর তালিকায় নাম নেই কানপুরের গ্যাংস্টারের।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন