রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা ল্যাপটপ আর ম্যাপ নিয়ে বসে আছেন। তাঁরা একটি বাড়ির নির্মাণকাজের তত্বাবধান করছেন। পুলিশের একটি দল ওই বাড়ির সামনে থাকা প্রত্যেক দর্শনার্থীর দিকে কড়া নজর রাখছেন। রাজনীতিবিদরা বাড়ির সামনে লাইন দিচ্ছেন। এই দৃশ্যগুলো মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার কারাউন্ডি গ্রামের বাসিন্দা দশমত রাওয়াতের বাড়ির। গত ৪ জুলাই কোল উপজাতির সদস্য রাওয়াত (৪০) একটি রাজনৈতিক ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে ঘিরে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে প্রবেশ শুক্লা (৩০) তাঁর ওপর প্রস্রাব করছেন।
তা নিয়ে কংগ্রেস বিন্ধ্যপ্রদেশ অঞ্চলের কোল উপজাতি ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চালায়। এই অঞ্চল বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। কংগ্রেস অভিযোগ করে যে প্রবেশ শুক্লা সিধি অঞ্চলের বিধায়ক কেদারনাথ শুক্লার সহযোগী। যদিও বিধায়ক সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ৬ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ভোপালে রাওয়াতের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং তাঁর পা ধুয়ে দেন। সেই থেকে, রাওয়াতের বাড়িতে দলীয় লাইন পেরিয়ে রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় কর্মী, উপজাতি নেতা এবং সাংবাদিকরা ভিড় করতে শুরু করেছেন।
আরও গুরুত্বপূর্ণ যে, তাঁর বাড়ির বাইরে মাত্র তিন দিনের মধ্যে একটি হাত পাম্প বসানো হয়েছে। তাঁর বাড়িকে প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে ঘাসের মাঠে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। রাজস্ব আধিকারিকরা নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করার সঙ্গে ইট পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে রাওয়াতের জন্য একটি নতুন বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। সাদা রঙে আঁকা এবং বিবর্ণ লাল টাইলসের আচ্ছাদনে সজ্জিত তার পুরনো মাটি ও ইটের বাড়ির বাইরে বসে রাওয়াত বলেছিলেন যে তাঁর প্রতি সবাই এত মনোযোগ দিচ্ছে, যে তিনি রীতিমতো 'ক্লান্ত'। স্থানীয় জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর ফোন ক্রমাগত বেজে যাচ্ছে। দর্শকরা যখন মাঝে মধ্যে সেলফির জন্য আসছেন, তখন বাধ্য হয়ে সেলফি তোলা ছাড়া তাঁর অন্য কোনও উপায় থাকছে না।
আরও পড়ুন- জম্মুতে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই জঙ্গির মৃত্যু, পুঞ্চে চলছে অভিযান
রাওয়াত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, 'আমি এই সব সহ্য করে ক্লান্ত। আমার মন চঞ্চল হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান আমাকে সাহায্য করেছেন। তিনি আমাকে টাকা দিয়েছেন এবং আমার বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। বাকি সবাই ফোটো সেশনের জন্য এসেছে। রাজনীতিবিদরা আমাকে ব্যবহার করছেন। তাঁরা আমাকে কিছু দেননি বা সাহায্য করেননি। কাজের জন্য বাইরে পর্যন্ত যেতে পারছি না। আমি আমার নতুন বাড়ির নির্মাণ তদারকি না-করা পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে পারব না।'