দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রবিবার সন্ধ্যায় ছড়িয়ে পড়ল হিংসার আগুন। যার ফলে মাথায় আঘাত পেলেন ছাত্র সংসদ JNUSU-এর সভাপতি ঐশী ঘোষ। সূত্রের খবর, আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকেই, যদিও সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। বেশ কিছু আহতকে ভর্তি করা হয়েছে এইমস-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টারে।
এক বিবৃতিতে JNUSU দাবি করে, হামলার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP), এবং পড়ুয়াদের পাশাপাশি হামলার নিশানা ছিলেন বেশ কিছু প্রফেসরও।
তাদের বিবৃতিতে JNUSU জানায়, "পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে ঘুরছে ABVP, সবাই মুখোশ পরে। ওরা ইট ছুড়ছে, পাঁঁচিল টপকে ঢুকছে, এবং হোস্টেলে ঢুকে ছাত্রদের মারছে। প্রহৃত হয়েছেন বেশ কিছু অধ্যাপকও। নির্মমভাবে আক্রান্ত হয়েছেন JNUSU সভাপতি ঐশী ঘোষ, তাঁর মাথা থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছে। ABVP'র গুন্ডাদের তাড়া খেয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে ছাত্রছাত্রীরা। পুলিশ এই অপরাধে জড়িত, তারা হুকুুম নিচ্ছে সংঘ সমর্থক প্রফেসরদের কাছ থেকে, পড়ুয়াদের ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিতে বাধ্য করছে।"
এই অভিযোগ খন্ডন করে ABVP এক পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, "ছাত্রছাত্রীদের ওপরে হামলা চালায় AFSI, AISA এবং DSF। অন্তত ১৫ জন পড়ুয়া আহত হয়েছে।" ABVP সভাপতি নিধি ত্রিপাঠি পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে 'নক্সালপন্থীরা' হোস্টেলে ঢুকে ভাংচুর চালিয়েছে, এবং ছাত্রছাত্রীদের লোহার রড দিয়ে আঘাত করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট
জেএনইউ কান্ডের প্রতিক্রিয়ায় টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "এই জঘন্য কাজের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই। এটি আমাদের গণতন্ত্রের লজ্জা।"
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, "জেএনইউ-এর পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের ওপর মুখোশধারী গুণ্ডাদের নৃশংস হামলা, যার ফলে গুরুতর আহত হয়েছেন অনেকে, তা স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো। আমাদের দেশের ফ্যাসিবাদী শাসকরা আমাদের সাহসী ছাত্রদের কণ্ঠকে ভয় পেয়েছে। জেএনইউ-এ আজকের হামলা সেই ভয়ের প্রতিচ্ছবি।"
এছাড়াও ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন একাধিক বিরোধী নেতা, যেমন এম কে স্টালিন, পি চিদাম্বরম, বৃন্দা কারাট প্রমুখ।
জেএনইউ-এর রেজিস্ট্রার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "সমগ্র জেএনইউ সম্প্রদায়ের উদ্দেশে জরুরি বার্তা যে, জেএনইউ ক্যাম্পাসে এক অস্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মুখোশ পরা হামলাকারীরা লাঠি হাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে সম্পত্তি বিনষ্ট করছে, এবং অনেককে আক্রমণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশে খবর দিয়েছে জেএনইউ প্রশাসন। এটা মাথা ঠাণ্ডা রেখে সতর্ক থাকার সময়। ক্যাম্পাসের বিশালত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজনে ১০০ ডায়াল করুন। ইতিমধ্যেই হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে।"