Advertisment

'আমাদের এখান থেকে নিয়ে চলো', গয়ায় বৌদ্ধ ভিক্ষুকে বলল আট বছরের শিশু

বিহারে অবশ্য শিশু নিগ্রহের ঘটনা এই প্রথম নয়। সম্প্রতি মুজফফরপুরে মহিলা এবং শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে যৌন হেনস্থার ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে ২৩ জন আধিকারিককে সাস্পেন্ড করেছে বিহার সরকার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতিকী ছবি

"আমাদের এখান থেকে নিয়ে চলো," কচি কচি মুখগুলোর এই আর্তি কানে যেতেই খটকা লাগে সাধনানন্দ ভানতের। আসাম এবং ত্রিপুরার চাকমা জনগোষ্ঠীর ওই শিশুদের তো উনিই ভর্তি করে গিয়েছিলেন গয়ার এই স্কুল এবং লাগোয়া মেডিটেশন সেন্টারে। সাধনানন্দ নিজে বৌদ্ধ ভিক্ষু। এবার এসেছিলেন খুদে পড়ুয়াগুলোর খোঁজখবর নিতে। ওদের মুখ থেকে যা শুনলেন, তেমনটা আশঙ্কা করেননি দুঃস্বপ্নেও।

Advertisment

ঘটনার পর ন'দিন কেটে গেছে। হোমের পরিচালকের বিরুদ্ধে শিশুদের ওপর যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে গয়া পুলিশের কাছে। স্কুলের পরিচালক ছাড়াও চিহ্নিত করা হয়েছে ৪৯ বছরের সুজয় ভানতে ওরফে সঙ্ঘপ্রিয়েকে। মেডিটেশন সেন্টারের ৩২ জন শিশুর (বয়স আট থেকে ষোলোর মধ্যে) প্রত্যেকের মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে শনিবার। গয়া পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জন্য আদালতের হেফাজতে রাখা হয়েছে। মেডিকেল টেস্টের ফলাফল বেরোলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে প্রশাসন।

আরও পড়ুন, সমীক্ষায় ফারাক ২ লক্ষের; হোমের বাকি শিশুরা কোথায়? কপালে ভাঁজ সুপ্রিম কোর্টের

বিহারে অবশ্য শিশু নিগ্রহের ঘটনা এই প্রথম নয়। সম্প্রতি মুজফফরপুরে মহিলা এবং শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে যৌন হেনস্থার ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে ২৩ জন আধিকারিককে সাস্পেন্ড করেছে বিহার সরকার। গয়ার বৌদ্ধ ভিক্ষুর স্কুলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া ২৯ অগাস্টের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কীভাবে শিশুদের নগ্ন করে তাদের দিয়ে অনেক "খারাপ" কিছু করিয়ে নেওয়া হতো। গত দেড় বছরে একবারও ওদের বাড়ি ফিরতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সাধনানন্দের বয়ানে, "যেদিন প্রথম খোঁজখবর নিতে যাই, ওরা মুখ ফুটে কেউ কিছু বলেনি আমায়। কাছেই স্কুলের পাহারাদারেরা ছিলেন হয়তো। কিন্তু ওদের দেখে আন্দাজ করতে পারছিলাম, কিছু একটা গণ্ডগোল রয়েছে। কয়েকজনের মুখে মাথায় ফোস্কা ছিল। ওই আট বছরের ছেলেটি ছাড়াও আরও কয়েকজন বাচ্চা এসে আমাকে ওদের এখান থেকে নিয়ে যেতে বলে, কিন্তু তাও আমি বুঝতে পারি নি এত বড় গোলমাল হয়েছে। এটা যে যৌন নিগ্রহের মতো বীভৎস কোনও ঘটনা, তা বুঝিনি।" সাধনানন্দই গয়ার এই স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন আসামের জনা দশেক শিশুর। এ কথা মনে পড়তেই অপরাধবোধে ভুগছেন তিনি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সূত্রের খবর অনুযায়ী, সঙ্ঘপ্রিয়ে পরিচালত মেডিটেশন সেন্টার এবং স্কুল কিন্তু বিহার সরকারের অধীনে নথিভুক্ত। সংগঠনের বিবরণে উল্লেখ করা রয়েছে, 'প্রান্তজনের আর্থসামাজিক, শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে সাহায্য' করাই এই সংগঠনের লক্ষ্য।

child abuse
Advertisment