সারা বিশ্ব জুড়ে দূষণ, মেরু প্রদেশের বরফ গলছিল তখনও। একটু একটু করে বেড়ে চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। কিন্তু মানুষ তখনও সচেতন হননি। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে কেন বিপদ, সে সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না আমাদের। গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রাথমিক ধারণা দিলেন কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিজ্ঞানী ওয়ালেস স্মিথ ব্রোয়েকার। সোমবার নিউইয়র্ক সিটি হাসপাতালে মৃত্যু হল কিংবদন্তী বিজ্ঞানী ব্রোয়েকারের। বেশ কিছু মাস ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে বিজ্ঞানীর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
১৯৭৫ সালের এক প্রতিবেদনে তিনি প্রথম 'গ্লোবাল ওয়ার্মিং' শব্দটি ব্যবহার করেন। "সেই সময় তিনি আঁচ করেছিলেন, পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। "সেই সময় ১৯৭০ সালে সারা বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা কমছিল, উনিই একমাত্র বলেছিলেন সেই ঘটনা সাময়িক, পৃথিবী আসলে উষ্ণ হচ্ছে। খুব কম বিজ্ঞানীই সে সময়ে ব্রোয়েকারের কথা শুনেছিলেন", বললেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিশেল অপেনহেইমার।
আরও পড়ুন, ক্যালাইডোস্কোপ, ২০১৯: পরিবেশকে বন্ধু ভেবে ফ্যাশন ফিরুক অঙ্গে, বঙ্গে
ওয়ালেস স্মিথ প্রথম বলেন পৃথিবীর কোনও অংশে হঠাৎ তাপমাত্রা অস্বাভাবিক রকম কমে যাওয়া আসলে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিশ্ব উষ্ণায়ন তাতে কমে না। তিনিই প্রথম বলেছিলেন পরিবেশে গ্রিন হাউজ গ্যাসের জন্যই উষ্ণায়ন হচ্ছে। আজকে মানুষের মনে পরিবেশ নিয়ে যতটুকু সচেতনতা এসেছে, তার অনেকটাই এই বিজ্ঞানীর জন্য। শুধু সামাজিক স্তরে নয়, গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর জন্য রাষ্ট্রকে সম্ভাব্য নানা পরিবেশনীতি গ্রহণ করানোর ব্যাপারেও অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন স্মিথ।
শিকাগোর সাবার্বান ওক পার্কে শৈশব কৈশোর কাটানো স্মিথ বিজ্ঞানীমহলে পরিচিত ছিলেন 'গ্র্যান্ডফাদার অব ক্লাইমেট সায়েন্স' নামে।