দীর্ঘ দিন যাবৎ পলাতক থেকে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার দায়ে গ্রেফতার হলেন উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলার বেলঘড়িয়ার বাসিন্দা অঞ্জন সেনগুপ্ত। তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর প্রায় দু বছর ধরে পলাতক ছিলেন এই সরকারি কর্মী।
কীভাবে ধরা পড়লেন এই প্রতারক?
আইনের ফাঁক দিয়েই প্রতারণা চালিয়ে গেছেন বহু বছর ধরেই। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালে সবার সামনে আসে এই প্রতারণা চক্রের কথা। এক মহিলা সে বছরই পুলিশের কাছে অঞ্জন সেনগুপ্তের নামে ১০ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ করেন। নার্সের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই মহিলার থেকে এই অর্থ নেন অঞ্জন সেনগুপ্ত। এরপরেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ (অর্থদ্বারা প্রতারণা), ৪২০ (প্রতারণা), ৪০৬ (বিশ্বাসভঙ্গ), ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় তাঁর নামে মামলা রুজু করে পুলিশ। যদিও তখন পুলিশের নাগালের বাইরেই ছিলেন অভিযুক্ত অঞ্জন।
আরও পড়ুন- টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হাওড়া কারশেড, জলের তলায় একাধিক এলাকা
পুলিশের তরফে জানানো হয়, "অবসরগ্রহণের পর নিজেকে সরকারি অফিসের সচিব স্তরের কর্তা বলে পরিচয় দিতেন অঞ্জন সেনগুপ্ত। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া, পছন্দসই জায়গায় বদলির করার প্রতিশ্রুতি দিতেন। তবে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, তাঁর জালে পড়ে প্রতারিত হন অধ্যাপক, সেনাবাহিনীর অফিসার, পুলিশ অফিসার এবং একজন স্কুল শিক্ষকও"। ২০১৭ সালে অঞ্জন সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ দেখে ২০১৭ সালেই নিজের বাড়ি এবং সব সম্পত্তি বিক্রি করে রীতিমতো অদৃশ্য হয়ে যান এই অভিযুক্ত। শুরু হয় খোঁজ।
আরও পড়ুন- আলো থাকলেও বিদ্যুৎ নেই, অন্ধকারেই পথ চলছে কাঁকসা
সম্প্রতি এই মামলা নিয়ে আবার নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তদন্ত শুরু করেই প্রথমে অঞ্জন সেনগুপ্তর পুরোনো বাড়ির ঠিকানা এবং তাঁর যাবতীয় ফোন নাম্বার খুঁজে বের করে পুলিশ। সেই ফোন নাম্বারের সূত্র ধরেই সমস্ত কল রেকর্ডও খতিয়ে দেখা হতে থাকে। সে সময়েই পুলিশে হাতে আসে অঞ্জন সেনগুপ্তের স্ত্রীর একটির নাম্বার। অভিযুক্তের নাগাল পেতে গোপনে স্ত্রীর ফোনে আড়ি পাতে পুলিশ, জানা যায় হুগলির শ্রীরামপুর এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছে অঞ্জন সেনগুপ্ত। পরে শ্রীরামপুর থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়, "গত এক বছর ধরে শ্রীরামপুরে থাকতো অঞ্জন সেনগুপ্ত। এমনকি নিজের চেহারাও বদলে ফেলেছিল সে"। ইতিমধ্যেই অঞ্জন সেনগুপ্তের ১৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।