এক মাস ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়িয়ে অবশেষে আত্মসমর্পণ 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' -সংগঠনের নেতা তথা খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের। রবিবার সকালে পাঞ্জাব পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পঞ্জাবের মোগা জেলায় আত্মসমর্পণের পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে স্পেশাল ডিরেক্টর জেনারে অফ পুলিশ (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) আর এন ধোকে বলেন, "আজ সকালে অমৃতপালকে মোগা জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।" অমৃতপাল সিংকে অসমের ডিব্রুগড় জেলে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই জেলেই রয়েছেন অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ পাপালপ্রীত, দলজিৎ সিং কালসি-সহ তাঁর আরও নয়জন সহযোগী।
অমৃতপাল সিং ১৮ মার্চ থেকে পলাতক ছিলেন। তাঁর খোঁজে এক মাস ধরে পঞ্জাব-সহ পড়শি রাজ্যে হন্যে হয়ে ঘুরেছে পুলিশ। পঞ্জাবের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতেও চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। তবে তাঁর হদিশ মেলেনি। বেশ কয়েকবার নাগালে পেয়েও শেষমেশ পুলিশকে বোকা বানিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন ওই খলিস্তানী নেতা। পঞ্জাব পুলিশ অমৃতপালের 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' সংগঠনের বিরুদ্ধে বড় মাপের অভিযানে নেমেছিল।
আর বেশিদিন পুলিশকে ঘোল খাইয়ে ঘোরানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল খলিস্তানী ওই নেতার পক্ষেও। শেষমেশ রবিবার সকালে অমৃতপাল সিংকে পুলিশ গ্রেফতার করে। নিহত জঙ্গি জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের আদি গ্রাম মোগার রোদে গ্রামের গুরুদোয়ারা জনম আস্থান সন্ত খালসা থেকে গ্রেফতার হন অমৃতপাল সিং।
আরও পড়ুন- বৃষ্টির সঙ্গেই বইবে ঝোড়ো হাওয়া, কয়েকটি জেলায় শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ভিন্দ্রানওয়ালের ভাগ্নে জসবীর রোদ বলেন, “অমৃতপাল গতকাল রাতেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে তিনি আজ সকালে গুরুদ্বারে প্রণাম করার পরে আত্মসমর্পণ করবেন। আত্মসমর্পণের আগে তিনি কয়েক মিনিটের জন্য সঙ্গতকে ভাষণও দেন। সকাল ৭টার দিকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন গোয়েন্দা বিভাগের আইজি।”
এদিকে, অমৃতপাল সিং গ্রেফতার হওয়ার পরেই পঞ্জাব পুলিশ রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছে। কোনও গুজবে কান না দেওয়ারও আবেদন জানানো হয়েছে। পঞ্জাব পুলিশের তরফে টুইটে লেখা হয়েছে, “অমৃতপাল সিং পঞ্জাবের মোগায় গ্রেফতার হয়েছেন। শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য নাগরিকদের আহ্বান জানান। কোনও ভুয়ো খবর শেয়ার করবেন না, সর্বদা যাচাই করুন এবং শেয়ার করুন।"
এর আগে গত ২১ এপ্রিল, অমৃতপাল সিংয়ের স্ত্রী কিরণদীপ কৌরকে শ্রী গুরু রাম দাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের বিমানে উঠতে বাধা দেয় পুলিশ। তাঁকে অমৃতসরের জল্লুপুর খেরাতে তাঁর স্বামীর বাড়িতেই ফেরত পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন পলাতক খলিস্তানপন্থী এই নেতা এখন অন্তত ছয়টি মামলার মুখোমুখি হতে চলেছেন। যদিও পাঞ্জাব পুলিশ তার বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) লাগুর ভাবনায় রয়েছে।