শনিবার থেকে হন্যে হয়ে তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পাঞ্জাব পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত অমৃতপাল সিংয়ের নাগাল পায়নি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর অমৃতপাল এখনও পলাতক, এর মাঝেই সামনে এল বড় খবর অমৃতপালের কাকা ও গড়ির চালক পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে'-এর একজন আইনি উপদেষ্টা দাবি করেছেন যে পাঞ্জাব পুলিশ অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতার করেছে। আইনজীবী আরও বলেন, পুলিশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃতপাল ভুয়ো এনকাউন্টার করতে পারে।
পলাতক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতার করতে পাঞ্জাব পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে। সোমবারও (২০ মার্চ) জারি রয়েছে তল্লাশি অভিযান। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, খালিস্তানি নেতা তার ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী আনন্দপুর খালসা ফোর্স (AKF)-এর সঙ্গে নিজে গা ঢাকা দিয়েছেন। সোমবারই অমৃতপালের কাকা হরজিৎ সিং এবং ড্রাইভার হরপ্রীত সিং পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর অমৃতপালের ব্যক্তিগত গাড়িতে বসে আত্মসমর্পণ করতে আসেন তারা। পুলিশ জানিয়েছে, অমৃতপালের সঙ্গে এই দুজন একই মার্সিডিজ গাড়িতে করে পালিয়ে যায়। পাঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি র্যাঙ্কের আক আধিকারিক অমৃতপালের আত্মসমর্পণের জন্য তার কাকা হারজিত সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। 'হারজিত সিংয়ে'র কাছ থেকে একটি পিস্তল এবং এক লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে।
অমৃতপাল কেন সরাসরি দুবাই থেকে পাঞ্জাব না এসে জর্জিয়ায় কেন গেলেন তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। তার জর্জিয়া যাওয়ার পেছনে 'পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা' আইএসআইয়ের হাত রয়েছে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। অমৃতপালের আইএসআই কানেকশনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ দলজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর 'দলজিৎ কালসি' ভারতবিরোধী প্রচার ও অস্ত্র সংগ্রহের কাজে যুক্ত ছিলেন। সূত্রের মতে, দলজিৎ কালসি গত তিন বছরে অমৃতপাল সিংয়ের সংগঠনের হয়ে ৩০ কোটি টাকারও বেশি সংগ্রহ করেছেন।
দাবি করা হচ্ছে দলজিৎ কালসির সঙ্গে পাকিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। তার টেলিফোন রেকর্ডে পাকিস্তানের ২০টি ফোন নম্বরের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, এর মধ্যে কিছু নম্বর পাকিস্তানি সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর নম্বর।ওয়ারিস পাঞ্জাব দে-এর একজন আইনি উপদেষ্টা দাবি করেছেন যে পাঞ্জাব পুলিশ অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতার করেছে। আইনজীবী আরও বলেন, পুলিশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে ভুয়ো এনকাউন্টার করতে পারে। এই পরিস্থিতি এড়াতে, পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
একই সময়ে, পুলিশ বলছে যে অমৃতপাল সিং এখনও পলাতক এবং তাকে গ্রেফতারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। অমৃতপালকে ধরতে সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, অমৃতপাল সিংকে গ্রেপ্তারের জন্য ১৫ দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে পাঞ্জাব পুলিশের একটি বৈঠক হয়। শনিবার সন্ধ্যায় পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে যে ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ নামের একটি চরমপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে অপারেশন জারি রেখেছে পাঞ্জাব পুলিশ। তারপর থেকেই খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারি অভিযানে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে পাঞ্জাব পুলিশকে। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অমৃতপাল সিংকে পলাতক বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
গত মাসে, অমৃতপাল সিং তলোয়ার, লাঠি ও বন্দুক নিয়ে সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে অমৃতসরের আজনালা থানায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। পরদিনই আদালতের নির্দেশে অমৃতপাল সিংয়ের সহযোগী লাভপ্রীত সিং ‘তুফান’কে মুক্তি দেওয়া এই সময় অমৃতপালের ‘ঘনিষ্ঠ’ মুক্ত করতে পুলিশের সঙ্গে তার সংঘর্ষও হয়। এই পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে হতবাক করেছে এবং তখন থেকেই ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ সংস্থার প্রধান অমৃতপাল সিং তদন্তকারী সংস্থার র্যাডারে রয়েছেন। অমৃতপাল সিং খোলাখুলিভাবে খালিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী ধারণাকে সমর্থন করার কথা বলেছেন।